দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাপ, কাঁকড়াবিছে ও মৌমাছির বিষে ক্যান্সার সারতে পারে। এমন দাবি করেছেন ভারতীয় এক বিজ্ঞানী। ব্যাপক গবেষণার পর ক্যান্সার রুখতে উল্লেখযোগ্য সাফাল্য লাভ করেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন ভারতীয় ওই বিজ্ঞানী।
বিষে বিষক্ষয়! আমরা এও জানি কেমোথেরাপিতেও সাপের বিষ ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ভারতীয় ওই বিজ্ঞানী দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে ক্যান্সার রুখতে এই উল্লেখযোগ্য সাফাল্য লাভ করেন বলে দাবি করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানী।
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী দীপাঞ্জন পান এবং তাঁর সহকারীরা আবিষ্কার করেন সাপ, কাঁকড়াবিছে ও মৌমাছির বিষ দিয়ে ক্যান্সারকে রোখা সম্ভব। তাঁরা ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখেছেন যে, এইসব বিষধর প্রাণীর বিষ প্রয়োগ করে ব্রেস্ট ক্যান্সার এবং মেলানোমা কোষের বৃদ্ধি রুখতে সক্ষম।
যুগ যুগ ধরে চিকিত্সকরা এইসব বিষ দিয়ে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে আসছেন। খ্রীস্টপূর্ব ১৪ বছরে গ্রিক লেখক প্লিনি দ্য এল্ডার বইতে লিখেছিলেন, ‘মৌমাছির বিষ ব্যবহার করলে টাকে চুল গজাতে পারে।’ আবার ৭৮০ খ্রীষ্টাব্দে ইউরোপের মহান সম্রাট চার্লেমাগনের গাঁটে ব্যাথায় নাকি চিকিৎসকরা মৌমাছির হুল ফোটাতেন। চিনের প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রেও ব্যাঙের বিষ যকৃত, ফুসফুস এবং অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার সারাতে ব্যবহত হওয়ার কথা বলা হয়। আবার, কিউবায় চিকিৎসকরা নাকি ব্রেন টিউমারের জন্য কাঁকড়াবিছের বিষ ব্যবহার করে থাকেন।
সাধারণত কারও শরীরে বিষ ঢুকলে প্রাণহানীও ঘটতে পারে। সাধারণত মৌমাছির হুল ফুটলে মেলিটিন থাকার কারণে প্রচন্ড জ্বালা করে থাকে। অতিরিক্ত বিষ কোষের ঝিল্লি নষ্ট করে দেয়। তারপর রক্তকে জমাট বাঁধিয়ে হৃদপিন্ডের পেশিগুলি ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে। অপরদিকে ক্যান্সার কোষের উপর একই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
দীপাঞ্জন পানের বিশেষজ্ঞ দল দীর্ঘদিন এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে এক নতুন দিশা দেখান। বিষের মধ্যে থাকা প্রোটিন এবং পেপটাইডকে আলাদা করে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রুখতে ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে বলে দাবি করেছেন দীপাঞ্জন পানে। গবেষকরা মনে করেন, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আরও গবেষণা চালালে দূরারোগ্য ক্যান্সারকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।