দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের সব থেকে ভয়াবহ এবং মারাত্বক রোগ হল ক্যান্সার। বর্তমানে আবহাওয়া এবং পরিবেশ দূষণের কারণে সবথেকে বেশি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো শরীরের ভাল কোষগুলোকে দ্রুত ধ্বংস করে ফেলে। সম্প্রতি ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করে যে ফলাফল পেয়েছেন তা কেমোথেরাপির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর।
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী খুব কম ভাল হয়। বেশির ভাগ রোগীই মারা যায়। বর্তমানে এই ক্যান্সার চিকিৎসায় যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তার নাম হল কেমোথেরাপি। কোন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শরীরে এই কেমোথেরাপি দেওয়া হলে এটি যেমন ক্যান্সার আক্রান্ত কোষকে ধ্বংস করে সেই সাথে অনেক সুস্থ কোষকেও ধ্বংস করে।এর ফলে দেহে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়, দেহকে অবসাদগ্রস্ত করে তোলে এবং শরীরের লোম পড়ে যায়। সম্প্রতি চাইনিজ একাডেমি অব সাইন্স ও সাংহাই ইনস্টিটিউট অব সিরামিক্সের একদল বিজ্ঞানী অজৈব ও অবিষাক্ত ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করে যে ফলাফল পেয়েছেন তা কেমোথেরাপির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর। এগুলো একধরনের অতি ক্ষুদ্র কণা, যা মানুষের রক্তপ্রবাহের সাথে সারা দেহে ভ্রমণ করে সুস্থ কোষগুলোকে রক্ষা করার পাশাপাশি ক্যন্সার আক্রান্ত কোষগুলোকে ধবংস করে । ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বজায় থাকে। গবেষণক দলের প্রধান শি জিয়ানলিন বলেন, তারা প্রথমে গবেষণাগারে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছে। এক্ষেত্রে টিউমারগুলো ৮৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
গবেষকরা এ পরীক্ষায় Fe3O4 ও SiO2 নামে দু’টি ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করেন। ইনজেকশনের মাধ্যমে এই দু’টি ন্যানোপার্টিকেল ইঁদুরের শিরায় প্রবেশ করানো হয়। আক্রান্ত কোষের রাসায়নিক উপাদানের সংকেত পেলে পার্টিকেলগুলো অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ উৎপাদন করে কোষগুলোকে ধ্বংস করে। ফলে সুস্থ কোষগুলোর কোন ক্ষতি হয় না।
সাংহাই’র হুয়াশান হাসপাতালের হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ শেন কুইনফেন মনে করেন, সম্প্রতি এই পদ্ধতি ব্যবহার করে যে ফলাফল পাওয়া গেছে তা খুবই কার্যকর। কেমোথেরাপি ব্যবহার করার পর লিউকেমিয়া ও লিমফোমা আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শ্বেত কণিকার পরিমাণ হ্রাস পায় এবং কলিজা, কিডনি বা নার্ভাস সিস্টেমের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। এর ফলে কেমোথেরাপি নেওয়া লিউকেমিয়া আক্রান্তদের অর্ধেকের বেশি রোগীই পরে বিভিন্ন সমস্যার কারণে মারা যান।
ধারনা করা হচ্ছে ন্যানোটেক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পর এই ধরনের কোন সমস্যা দেখা দিবে না। ন্যানোপার্টিকেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এগুলো এতোই ছোট যে কোষের সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াসের মধ্যে অনাসেয়ে প্রবেশ করতে পারে। যা রোগের নিরাময়কে অধিক কার্যকর করে তোলে।
গবেষকরা বলেছেন, এখনো কয়েকবার পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর এটি ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে।