দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিমের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে এটি আমরা জানি। কিন্তু এই ডিম আমাদের কি কি উপকার করে তা জানিনা। আজ ডিম খাওয়ার কয়েকটি উপকারিতা জেনে নিন।
ছেলে-মেয়েদের ডিম খাওয়ান। আবার অনেকেই নিজেও ডিম খান। কিন্তু কিভাবে এই ডিম খেলে উপকার পাওয়া যাবে তা আমরা কেওই জানিনা। তবে অনেকেই ফ্যাটি হওয়ার ভয়ে ডিমের কাছেও ভিড়তে চান না। ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়েও অনেকেই ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। আবার রক্তে চর্বির পরিমাণ কম রাখতে, হৃদরোগের কারণেও অনেকেই ডিম খেতে ভয় পায়। কিন্তু আসলেও কি ডিম এগুলোতে ক্ষতি করে? কিন্তু চিকিৎসকেরা আজকাল বলছেন একেবারেই উল্টো কথা। তারা বলেছেন, সকালে নাস্তায় একটি ডিম খেলে মাসে প্রায় ৩ পাউনড পর্যন্ত ওজন কমে যেতে পারে। তাহলে আসুন, জেনে নেওয়া যাক ডিমের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে।
# ডিমের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ। যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। ডিমের কেরোটিনয়েড, ল্যুটেন এবং জিয়েক্সেনথিন বয়সকালের চোখের অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। আবার এই একই উপাদান চোখের ছানি কমাতেও সাহায্য করে থাকে।
# ডিম যতো ছোটই হোক এতে হাজারো ভিটামিনে ভরা। ডিমের ভিটামিন বি১২- আপনি যা খাচ্ছেন সেই খাবারকে এনার্জি অথবা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে থাকে।
# ডিমের সবচেয়ে বড় গুণ হলো- এটি ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকারের নাস্তায় একটি ডিম মানে সারাদিন আপনার ক্ষুধা কম হবে। গবেষণকরা গবেষণা করে দেখেছেন, শরীর হতে দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে সকালের একটি ডিম খাওয়া কারণে। অর্থাৎ এতে দেখা গেছে মাসে ওজন কমার পরিমাণ প্রায় তিন পাউন্ড।
# ডিমে রয়েছে ভিটামিন ই। এটি কোষ এবং ত্বকে উত্পন্ন ফ্রি র্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয়। আবার এটি স্কিণ ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে বলে গবেষণকরা বলে থাকেন।
# হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষা চালানো হয় ২০০৩ সালে। সেই সমীক্ষায় দেখা যায়, নারীদের অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বা পরবর্তীকালে সপ্তাহে ৬টি করে ডিম নিয়মিত খেলে প্রায় ৪৪% ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভবপর হবে৷ আবার গবেষকরা দেখেছেন, ডিম হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে বাঁধা দেয়। ফলে স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই কমে যায়।
# ডিমে রয়েছে আয়রণ, জিঙ্ক ও ফসফরাস। মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দিতে পারে। এতে শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রণ এই ঘাটতি মেটাতে পারে খুব সহজেই। আবার জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম অথবা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। অপরদিকে ফসফরাস হাড় এবং দাঁত মজবুত করে থাকে।
# প্রতিটি নারীর শরীরে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের প্রয়োজন হয়। একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ ক্যালোরি অথবা ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। আর তাই শরীরকে ঠিক রাখতে নারীরা প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারেন।
# মানুষের শরীর সুস্থ রাখার আরও একটি জরুরি উপাদান হলো কোলাইন। কোলাইনের ঘাটতি থাকলে অনেক সময় কার্ডিওভাসকুলার, লিভারের অসুখ বা নিউরোলজিক্যাল ডিজ-অর্ডার দেখা দিয়ে থাকে। অথচ একটি ডিমে প্রায় ৩শ’ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন থাকে। যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, স্নায়ু, যকৃত্ এবং মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
# আমরা জানি প্রোটিন শরীর গঠন করে। আর প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে থাকে অ্যামিনো অ্যাসিড। ২১ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড এই কাজে প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমাদের শরীর এই অতি প্রয়োজনীয় ৯টি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না। তারজন্য আমাদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হয়। খাবারের মধ্যে এই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হলো ডিম। যা দ্রুত শরীরে প্রোটিন উত্পাদন করতে সাহায্য করে।
# নখ ভেঙে যাওয়া, চুলের স্বাস্থ্য খারাপ ইত্যাদিতেও প্রতিদিন ডিম খেয়ে যান। ডিমের মধ্যে থাকা সালফার অনেকটা ম্যাজিকের মতোই নখ ও চুলের মান বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
# এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডিম আসলে কোলেস্টেরল বাড়ায় না। দিনে দুটি ডিম শরীরের লিপিড প্রোফাইলে কোনও প্রভাবই ফেলে না। বরংচ ডিম রক্তে লোহিতকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে।