দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজ আপনাদের জন্য রয়েছে মজার ও অদ্ভুত চাকরির কথা। যা সত্যিই আপনাকে বিস্মিত করবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেইসব আজব কাহিনী।
আমরা প্রতিদিন চাকরি করতে করতে সত্যিই হাঁপিয়ে উঠেছি। একঘেয়ে অর্থাৎ একই কাজ করতে হয় প্রতিদিন- সেটি কার ভাল লাগে। কিন্তু কাজ ছাড়া জীবন অচল। আপনি হয়তো এমন কথা শুনলে অবাক হবেন যে পৃথিবীতে এমন কিছু চাকরি রয়েছে যাকে আপনি কখনও চাকরি হিসাবে ভাবতে পারবেন না। অথচ বাস্তব সত্য হলো পৃথিবীজুড়ে অনেক মানুষের বেঁচে থাকার রসদ যোগাচ্ছে এই চাকরিগুলি। আসুন দেখে নেওয়া যাক মজার ও অদ্ভুত পেশাগুলো আসলে কেমন।
ঘুমানোর জন্য চাকরি!
এমন কথা শুনতে আপনার অদ্ভুত লাগলেও এমন চাকরিও রয়েছে এই জগতে! শুধু ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই টাকা রোজগার করা যায়। বিজ্ঞানীরা যখন কোনো ঘুমের ওষুধ বা ঘুম সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে গবেষণা চালান, তখন কিছু মানুষকে টাকার পরিবর্তে ওই ওষুধ বা গবেষণায় কাজে লাগানো হয়ে থাকে! অর্থাৎ ঘুমের পরিবর্তে তারা পাচ্ছেন টাকা। এটিও তাদের একটি চাকরি।
প্রফেশনাল পুশার বা ধাক্কাবাজ!
আমরা ট্রেনে-বাসে চলতে গেলে এই কথাটি প্রায়ই শুনে থাকি- ‘দাদা ধাক্কা দেবেন না’। কিন্তু আপনি আসলে জানেনও না যে, এই ধাক্কা দেওয়ার কাজটি কারো কারো পেশা হতে পারে! আর এই ব্যতিক্রমি কাজটি করা হয় জাপান ও নিউইয়র্ক সিটিতে রেলস্টেশনে। সেখানে ভিড়ের সময় প্রফেশনাল পুশাররা ধাক্কা দিয়ে ট্রেনের ভিতর লোক ঢুকাতে সাহায্য করে থাকে! এক সময় এটি স্টুডেন্টদের জন্য পার্টটাইম চাকরি ছিল। এখন এটিকে অনেকেই ফুল টাইম চাকরি হিসেবে বেছে নিচ্ছে!
ভাড়া করা প্রেমিক!
ভাড়া করা প্রেমিক! হয়তো এমন কথা শুনলে আপনি অবাক হবেন। কিন্তু বাস্তবে তাই ঘটছে। হয়তো আপনার কোনো প্রেমিক নেই। তাতে কি? অনায়াসে ভাড়া করতে পারেন প্রেমিক। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটে এমনই সব লোভনীয় বিজ্ঞাপনের খোঁজ মিলবে। ছবি, নামসহ কার ভাড়া কত সব তথ্য হাজির থাকবে আপনার সামনে। জাপান, চীন, আমেরিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে প্রেমিক ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে। আশ্চর্যের বিষয় হলো এমন কাজ সেসব দেশে আইনসম্মতও!
ডিওডোরেন্ট টেস্টার!
এক বিদঘুটে চাকরি হলো ডিওডোরেন্ট টেস্টারের চাকরি। অন্যের শরীরের ডিওডোরেন্টের গন্ধ পরীক্ষা করতে এই পেশার মানুষদের দিনের পুরো সময় কেটে যায়। কোন ফ্লেভারটি আমার, বা কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে এটা তারাই বাছাই করে দেন। ডিওডোরেন্টের গন্ধ সবচেয়ে বেশি বোঝা যাবে বগল আর গলায়। তাই এই বিষয়ে পেশাদার পরীক্ষককে সারাদিন মূলত বগলের গন্ধই বেশি শুঁকতে হয়! পরীক্ষককে একবার শুঁকতে হয় বগলের দুর্গন্ধ থাকা অবস্থায়, আবার শুঁকতে হয় সেন্ট না দিয়ে সাধারণ গন্ধ, তারপর একেবারে শেষে সেন্ট বা পারফিউম লাগানোর পর সুগন্ধে ভরা বগলের গন্ধ। এরপরই পরীক্ষক কোম্পানিকে রিপোর্টে লেখেন সেই বিশেষ সেন্ট অথবা ডিওডোরেন্টের পারফরম্যান্স। অর্থাৎ ভাল দিক- খারাপ দিক, বাজারে কতটা এসব পণ্য চলবে, সেসব বিষয়ে লিখেন পরীক্ষক।
ওয়াটার স্লাইড পরীক্ষক চাকরি
ওয়াটার কিংডমে গিয়ে পানির মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা আনন্দ করে থাকি। ওয়াটার স্লাইড দিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিচে নেমে থাকি। অথচ আমরা কোনও ধরনের দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছি না।
দুর্ঘটনা না হওয়ার কারণ হলো ওয়াটার স্লাইড পরীক্ষক। আমাদের সুস্থ রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওয়াটার স্লাইড টেস্টার আগে হতেই স্লাইডটি পরীক্ষা করে রাখেন। এই স্লাইডে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না- এটা দেখার দায়িত্ব তার।
লাইনে দাঁড়ানোর আজব চাকরি
এমন কথা শুনে আপনি অবাক হবেন সেটিই স্বাভাবিক। কিন্তু ঘটনাটি আসলেও সত্য। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে কার ভালো লাগে? তখন আপনার মনে হবে যদি একটা লোক পাওয়া যেতো দাঁড়ানোর জন্য! হ্যাঁ, তেমন লোকও রয়েছে আপনার জন্য। এরকম কাজের জন্য জাপানে চাহিদা খুব বেশি। কিছু মানুষ আপনার হয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকবেন ঘন্টার পর ঘন্টা। এর পরিবর্তে আপনাকে তাদেরকে শুধু দিতে হবে টাকা।
বিয়ের অতিথি হওয়ার ব্যতিক্রমি চাকরি!
আমাদের দেশে বিয়েতে অতিথি হওয়ার লোকের অভাব থাকে না। কিন্তু এমনও দেশ রয়েছে যেখানে অতিথি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আর তাই বিয়েতে অতিথি ভাড়া করা হয়। এমন চাকরিও রয়েছে দুনিয়ায়। এই কাজের প্রচলন রয়েছে জাপানে। বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথির সংখ্যা বাড়াতে লোক ভাড়া করা হয়। টাকার বিনিময়ে তারা বিয়েবাড়ি গিয়ে খেয়ে আসেন।
ব্যতিক্রমি কাঁদার চাকরি!
সিনেমা নয়, বাস্তবে কিছু মানুষকে ভাড়া পাওয়া যায় কোনো মানুষের মৃত্যুতে কাঁদার জন্য। যাদের কাজই হলো মানুষের মৃত্যুতে অর্থের বিনিময়ে কাঁদা।