দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এমন কথা শুনে যে কেও বলতে পারেন যে চোর আবার সৎ হয় নাকি? কিন্তু যে চোরের গল্প আপনাদের জন্য রয়েছে সেটি আসলেও এক সৎ চোরের গল্প!
আমরা যানি চোর তো চোরই। তার কাজ চুরি করা। টাকা-পয়সা, গয়না-গাটি, জিনিসপত্র যায়ই হোক না কেনো সে সামলে পেলেই চুরি করবে। আর চুরি করা জিনিস ফেরত দেওয়ার কথা কখনও কি কোনো চোর ভাবতে পারেন! কিন্তু আজ যে চোরের কাহিনী রয়েছে সেটিতে এমনই এক গল্প বিদ্যমান।
এমন এক চোরের গল্প যে চোরের প্রধান টার্গেট ভারতে বেড়াতে যাওয়া বিদেশী। এই চোর প্রথমে তাদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলেন। এরপর সুযোগ বুঝে দামি মোবাইল, ল্যাপটপ, নগদ অর্থ কিংবা ডলার হাতিয়ে সটকে পড়েন। তবে বিদেশী এসব অতিথিরা যাতে বিপদে না পড়েন সেজন্য ডাক অথবা কুরিয়ারযোগে তাদের পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফেরত পাঠিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, তারা সেগুলো আবার ঠিকমতো ফেরত পেয়েছেন কি-না, তা জানার জন্য আবার ফোনও করেন।
কিন্তু দু:খের বিষয় হলো, এমন ‘দায়িত্ববান’ চোরকে অবশেষে হাতেনাতে পাকড়াও করেছে মুম্বাই শহরের রেল পুলিশ। মুম্বাইয়ের সিএসটি স্টেশন হতে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
৬১ বছর বয়সী ওই চোরের নাম সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালি। পুলিশকে মাদ্দালি জানায়, ছোট হতেই চুরিতে হাত পাকিয়েছেন তিনি। বছর তিনেক পূর্বে মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হতে অবসর নিয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের এই বাসিন্দা তেলেগু, মারাঠি, হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষাতেও পারদর্শী সে।
রেল পুলিশের এক কর্মকর্তা বাবান কোয়েল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালি সৌদিপ্রবাসী দেবীদাসন শিবরামের ব্যাগ চুরি করেন। এরপর তিনি ব্যাগের মধ্যে থাকা পাসপোর্টটি ভারতে সৌদি দূতাবাসে ডাকযোগে ফেরত পাঠান। নাইজেরিয়ার বাসিন্দা চেন্নাই মেইলের যাত্রী রুকো মিগা মুফিজা ইসার ব্যাগ চুরি করেন সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালি। ইসা মুম্বাইয়ের আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ইসার ব্যাগ হতে ল্যাপটপ ও ৫০ হাজার রুপি চুরি করলেও পরে তার পাসপোর্টটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে দেন সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালি। একটি পাবলিক টেলিফোন বুথ হতে ইসাকে ফোন করে জেনে নেন, তিনি তার পাসপোর্টটি ফেরত পেয়েছেন কি-না। এভাবেই চলে আসছিল সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালির চুরির কারবার। তবে তিনি ধরা খান সম্প্রতি মুম্বাইয়ে সৌদি আরবে কর্মরত কর্ণাটকের আতাউর রহমান মহম্মদ হুগার ব্যাগ চুরি করতে গিয়ে। রেল পুলিশের কাছে ধরা পড়েন সুব্রহ্মণ্যম মাদ্দালি। প্রতারণা ও চুরিসহ একাধিক অভিযোগে পুলিশ দীর্ঘদিন ধরেই তাকে খুঁজছিল। স্টেশনের সিসিটিভির ফুটেজ ও তার টুপি এবং সানগ্লাস দেখে তাকে শনাক্ত করে পুলিশ। আর তাই ধরা পড়ে পুলিশের জালে। তবে একটি নিকট সত্যি হলো, চুরি করলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফেরত দেওয়ার নীতিতে তিনি ছিলেন অটল- অর্থাৎ যাকে সৎ চোর বলা যায়। তথ্যসূত্র: sangbadpratidin.in