দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন মুলুকের সেই ‘ঘড়ি বালক’ আহমেদ দেড় কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। হয়রানির করায় তার পরিবার নগর ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এই ক্ষতিপূরণ চেয়েছে।
এর অন্যথায় হলে দুই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবিরা। গত সোমবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আর্ভিং নগর কর্তৃপক্ষ ও ম্যাকআর্থার স্কুলে পৃথকভাবে চিঠি পাঠিয়েছেন আহমেদ পরিবারের আইনজীবিরা।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, ‘ঘড়িকাণ্ড’ নিয়ে আহমেদের গ্রেফতার এবং অভিভাবকদের অনুপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করাকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ওই ঘটনাটির জন্য দুই কর্তৃপক্ষকেই ক্ষমা চাইতেও বলা হয়েছে ওই চিঠিতে। এই অর্থ না পেলে আগামী ৬০ দিনের মধ্যে মামলা করা হবে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে নিজের তৈরি করা একটি ঘড়ি শিক্ষকদের দেখাতে স্কুলে নিয়ে যান ম্যাকআর্থার স্কুলের নবম গ্রেডের শিক্ষার্থী আহমেদ। কিন্তু তার ঘড়িটিকে ‘বোমা’ ভেবে পুলিশে খবর দিলে আহমেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য যখন পুলিশ বুঝতে পারে ওটি আসলেও একটি ঘড়ি ছিল, তখন তাকে ছেড়ে দেয়। মূলত মুসলমান হওয়ায় এমন কাণ্ড করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত গড়ায়। প্রেসিডেন্ট ওবামা আহমেদকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানান। পরে আহমেদ ওবামার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এ ঘটনায় সেসময় বিশ্বজুড়ে প্রচণ্ড প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ফেইসবুক, টুইটারসহ সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যবহারকারীরা আহমেদের পক্ষে ‘আই স্ট্যান্ড উইথ আহমেদ’ এবং ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ফর আহমেদ’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে লাখ লাখ ক্ষুদে বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।
অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিও আহমেদের প্রতি তাদের সমর্থন জানায়। ফেইসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গও আহমেদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানান।
ঘড়িরকাণ্ডের পর আহমেদ আর ম্যাকআর্থার স্কুলে ফিরবেন না বলে তার পরিবার জানিয়ে দেন। ১৪ বছর বয়সী আহমেদ বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে কাতারের রয়েছেন। কাতার ফাউন্ডেশনের দেওয়া শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মেধাবৃত্তি নিয়ে আহমেদ সেখানেই পড়াশোনা করছেন। আহমেদকে এই ফাউন্ডেশন মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত পূর্ণ মেধাবৃত্তি দেয়।
উল্লেখ্য, ওই ঘটনার পর টাইম ম্যাগাজিন ২০১৫ সালে বিশ্বের প্রভাবশালী ৩০ কিশোর-কিশোরীর তালিকা প্রকাশ করে। সেখানে উঠে আসে এই ‘ঘড়ি বালক’ আহমেদের নাম!