দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কথা ছিল বিয়েতে বিশাল এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। কিন্তু চোখের সামনে শরণার্থীদের কষ্ট দেখে সে অনুষ্ঠান বাতিল করে বিয়ে অনুষ্ঠানের টাকায় শরণার্থীদের অনুদান দিলেন এক নবদম্পতি!
কানাডার এক নবদম্পতি পরিকল্পনা করেছিলেন বিলাসবহুল আয়োজনের মাধ্যমে বিয়ে করার। কিন্তু সিরীয় শরণার্থীদের সহায়তা করার জন্য শেষ পর্যন্ত তাদের বিলাশবহুল বিয়ের পরিকল্পনা বাতিল করে পুরো অর্থই দান করলেন তারা।
কানাডার এই নবদম্পতি সামান্থা জ্যাকসন ও ফারজিন ইউসেফ। তারা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমাদের বিবাহিত জীবন শুরু করার জন্য এর থেকে ভালো কিছু আর হতে পারে না। এই খবর প্রকাশিত হয়েছে বৃটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাতে।
কানাডিয়ান ওই যুগল বলেছেন, সেপ্টেম্বরে তুরস্কের সমুদ্রসৈকতের সেই ৩ বছর বয়সি সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির মৃতদেহ উদ্ধারের ছবি তাদের মনে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। তারপরই তারা এমন একটি সিদ্ধান্ত নেন। তারা ২০১৪ সালে আংটি বদল করেন। বিয়ের জন্য বড় অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছিলেন। বিয়ের জন্য ভেন্যু পর্যন্ত বুকিং দিয়ে ফেলেছিলেন। আবার অনুষ্ঠানের খাবার সরবরাহের লোকও ভাড়া করে ফেলেছিলেন। ১৩০ জনের অতিথি তালিকা করেছিলেন।
সিরীয় শরণার্থীদের কথা চিন্তা করে পরে তারা বিলাসবহুল এই আয়োজন সম্পন্ন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তারা পুরোটাই বাতিল করে দিয়ে গত মাসে টরোন্টোর সিটি হলে ছো্ট্ট একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ের জরুরত সারেন। আর বিয়ে বাবদ রাখা পুরো অর্থই তিনি দান করে দেন একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানে।
এবিসি নিউজকে জ্যাকসন বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসে আমরা আমাদের বিয়ে পরিকল্পনার মাঝামাঝিতে ছিলাম। তখনই ৩ বছর বয়সি আয়লান কুর্দীর ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। অনেকের মতো আমরাও উপলদ্ধি করতে শুরু করি পরিস্থিতি কতোটা খারাপ। আর এই অবস্থায় পদক্ষেপ নেওয়াটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ইতিবাচক কিছু করাটা অত্যন্ত জরুরি মনে করি। তাই আমরা বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করে বিয়ের জন্য রাখা সব অর্থই দান করে দেই।’
উল্লেখ্য, কানাডার এই নবদম্পতি রায়ারসন ইউনিভার্সিটি লাইফলাইন সিরিয়া চ্যালেঞ্জের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বর্তমানে কাজ করছেন। এই সংগঠনটি বাস্তুচ্যুত সিরীয় পরিবারগুলোর পূনর্বাসনের খরচ বহনে তহবিল গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত শরণার্থীদের সহায়তায় ১৭,৫০০ ডলার উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছেন এই নবদম্পতি। তারা সব সময় শরণার্থীদের পাশে থাকার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।