দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গবেষকদের অভিমত দিয়েছেন যে, পাখির কথার অর্থ রয়েছে। শুধু মানুষই নয়, পাখিও পরিপূর্ণ বাক্যে কথা বলতে পারে, এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
আমরা জানি মনের ভাব প্রকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো পরিপূর্ণ বাক্য বলতে পারা। আর এ কারণেই মানুষই হলো অন্য প্রাণী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তবে এবার গবেষকরা করে বলছেন, শুধু মানুষই নয়- পাখিও পরিপূর্ণ বাক্যে কথা বলতে পারে।
নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানি টিট প্রজাতির পাখিরা যোগাযোগের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করে থাকে। গবেষকরা বলেছেন, শব্দবিন্যাস যোগাযোগের ক্ষেত্রে আচরণগত জটিলতা তৈরি করে থাকে। ভাষার মূল ভিত্তি হলো, কিছু শব্দের সন্মিলনে পরিপূর্ণ বাক্য তৈরি করা।
গবেষণায় আগেই পাওয়া গেছে, পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীরা তাদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য কিছু অনর্থক শব্দ তৈরি করে থাকে। তবে পরিপূর্ণ শব্দবিন্যাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। যা মানুষের জন্য খুবই সহজসাধ্য।
জাপান, জার্মানি ও সুইডেনের গবেষকরা জোরালোভাবে দাবি করেছেন যে, ‘টিট পাখিদের বিচিত্র কন্ঠের আওয়াজে রয়েছে নানা শব্দ বিন্যাস।’
আপসালা ইউনিভার্সিটি-এর ড. ডেভিড হুইটক্রফট জানান, ‘এই গবেষণা হতে প্রতীয়মান হয়, শব্দবিন্যাস ক্ষমতা শুধু মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান নয়, পাখিরাও শব্দ বিন্যাস করতে সক্ষম।’
গবেষকরা বলেছেন, যোগাযোগ সম্পন্ন করতে জাপানি টিট পাখি বিভিন্ন রকম ডাক দেয়। ছোট প্রজাতির টিট পাখিরা যখন বিপদ বুঝতে পারে কিংবা শিকারির উপস্থিতি বুঝতে পারে তখন তারা বিভিন্ন রকম ডাক দেয়। এই ডাকগুলো কোনোটি একটি অর্থ আবার কোনটি কয়েকটি শব্দের সমন্বয়েও হয়ে থাকে বলে গবেষকরা অনুমান করছেন।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড মিরর বলেছে, ‘প্লে-ব্যাক পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে যে, কোনো ‘বিপদ উপলব্ধি করতে পারলে’ পাখিরা ‘এবিসি’ ব্যবহার করে! আবার কোনো খাদ্যের সন্ধান পেলে কিংবা সঙ্গীকে ডাকতে তারা ‘ডি’ ব্যবহার করে থাকে। কোনো শিকারির উপস্থিতি বোঝাতে এই দুটি শব্দের সমন্বয় করে ‘এবিসি-ডি’ শব্দবিন্যাসে ডাক দেয় পাখিরা। এই বিন্যাসে ডেকে তারা অন্য সঙ্গীদের সতর্ক করে দেয় বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দেখা গেছে, কৃত্রিমভাবে এই শব্দ বিন্যাসকে উল্টিয়ে দিলে তারা এর কোনো জবাব দেয় না।
হুইটক্রফট বলেছে, টিট পাখির এই শব্দবিন্যাসের ক্ষমতা জানতে পারলে, মানবজাতির বিবর্তন সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে।