দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডায়াবেটিস রোগীরা যদি হতাশা বা উদ্বেগে ভোগেন, তখন তাদের শরীরে যে সব হরমোনের ক্ষরণ হয়, তা রক্তে শর্করার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে করে একটি রোগ ডেকে আনতে পারে আরেটিকে।
মানসিক অবসাদের সঙ্গে কি ডায়াবেটিসের আদৌ কোনও রকম যোগসূত্র রয়েছে? এক কথায় বললে রয়েছে। চিকিৎসকরা মনে করেন, কোনও ব্যক্তি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে যেমন তার মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়, ঠিক তেমনিভোবে কোনও ব্যক্তি মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হলেও তার ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কাও বাড়তে পারে।
# ডায়াবেটিস রোগ এক বার শরীরে বাসা বাঁধলে এর হাত ধরে একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তখন বাড়ে। যে কারণে রোগীর মনে ঢুকে যেতে পারে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা ধরনের দুশ্চিন্তা। এই দুশ্চিন্তা থেকে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতিও হতে পারে।
# ডায়াবেটিসের কবলে পড়লে খাদ্যাভ্যাসে বেশ কিছু পরিবর্তনও আনতে বাধ্য হন রোগীরা। কেও যদি খেতে খুব ভালোবাসেন এবং হঠাৎ চিকিৎসক তার পছন্দের সব খাবারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন, সেই আকস্মিক পরিবর্তন মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাবও ফেলতে পারে।
# মানসিক চাপ এবং মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা শরীরে হরমোন ক্ষরণকে আরও প্রভাবিত করে। হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে গেলে সেটি ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে বেশ বিপজ্জনকও হয়ে উঠতে পারে।
# মানসিক অবসাদের কারণে দৈনন্দিন জীবনে একাধিক পরিবর্তনও আসতে পারে। অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগলে অতিরিক্ত ধূমপান এবং মদ্যপানও শুরু করেন। এই অভ্যাসগুলো ছাড়াও দেখা দিতে পারে শরীরচর্চায় অনীহা বা খাদ্যাভ্যাসের অনিয়মও। এইসব কাজ তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের পক্ষে মোটেও ভালো নয়। এই অভ্যাসগুলো ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org