দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২১-২২ অর্থবছরে আওয়ামী সরকারের আমলে প্রযোজক হিসেবে ‘মায়া’ নামে সিনেমা নির্মাণের জন্য ৬৫ লাখ টাকা অনুদান পান দেশসেরা নায়ক শাকিব খান।

ওই সিনেমার অনুদানের প্রথম কিস্তির চেক (১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা) ২০২২ সালের ২১ আগস্ট গ্রহণও করেন এই তারকা। তারপর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ সময়। তবে ৩ বছরেও ‘মায়া’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের খবর শোনা যায়নি। বেশ কয়েক দফায় তথ্য মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে শাকিব খানসহ অন্যদের তাগিদও দেয়। তবে তাদের কোনো সাড়া মেলেনি।
বিগত সরকার পতনের পর গত ২৮ মে গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশিত হয়। তারপর বিষয়টি আমলে নেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। পুনরায় শাকিব খানকে চিঠি দিলে তিনি অনুদানের প্রথম কিস্তির টাকা সম্প্রতি ফেরত দিয়েছেন বলে জানা যায়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা একটি সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘শাকিব খান ওই টাকা জমা দিয়ে গেছেন। যারা এখনও টাকা নিয়েও কাজ শুরু করেননি তাদের আমরা নিয়ম অনুযায়ী শোকজও করেছি। তারপর অনেকেই টাকা জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে শাকিব খান একজন।’
নিয়ম অনুযায়ী অনুদানের চেক পাওয়ার ৯ মাসের মধ্যে সিনেমা নির্মাণ করে তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার বিধান রয়েছে। সিনেমা নির্মাণে দেরি হলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে আবেদন করে সময় বাড়ানো যায়। অথচ অনুদান পাওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শাকিব খান সিনেমাটি নির্মাণ করেননি এবং সময় বাড়ানোর জন্য কোনো আবেদনও করেননি। অনুদানের টাকা তুলে কাজ শেষ না করে বরং তাল বাহানা করছিলেন। সে কারণে তোপের মুখে টাকা ফেরত দেন শাকিব খান।
উল্লেখ্য, সরকারি অনুদানের এই ‘মায়া’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে চিত্রনায়িকা পূজা চেরির অভিনয় করার কথা ছিলো। কিন্তু শাকিবের সঙ্গে ‘প্রেম ইস্যুতে’ আলোচনায় আসলে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিনেমাটি থেকে সরে আসেন পূজা চেরি। এই সিনেমাটি পরিচালনা করার কথা ছিল ‘প্রিয়তমা’খ্যাত হিমেল আশরাফের। তবে নিজের ব্যস্ততা দেখিয়ে অনেক আগেই সিনেমাটি হতে সরে আসেন এই পরিচালকও।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org