দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রত্যেকটি মানুষ তাদের জীবনের একটি পর্যায়ে এসে বাবা-মা হতে চায়। কিন্তু দীর্ঘদিনের কিছু ভুল অভ্যাস তাদের আশার গুঁড়ে বালি দিতে পারে। আজ জেনে নিন যেসব অভ্যাসে বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে।
সম্প্রতি মানুষ তার পারিবারিক জীবনে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। বিশেস করে টিনএজ থেকে যেসব তরুণীদের মাসিকের সমস্যা পড়ে থাকেন তারা বিয়ের পর প্রথম বছরেই ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। এদের মধ্যে অনেকে আসেন, যাদের স্বামী দেশের বাইরে থাকেন, তারা সুস্থ থাকা সত্ত্বেও ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। তাড়াতাড়ি বাচ্চা নেয়ার জন্য এটি তাদের করনীয় হয়ে থাকে। আবার এমন অনেক আছেন যারা বছর খানেক চেষ্টা করে তারপরে ডাক্তারের সরনাপন্য হন। আমাদের জীবনে বন্ধ্যাত্ব একটি অভিশাপ যার থেকে প্রতীকার চায় প্রত্যেকটি পরিবার। সম্প্রতি আমাদের দেশে বন্ধ্যাত্ব বেড়ে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে আর এই কারণগুলোর মধ্যে মূলত জীবনযাপনের পদ্ধতি অন্যতম। অনেকের ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ও অভ্যাস এর কিছুটা পরিবর্তন আনলেই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা অনেক ক্ষেত্রেই নিবারণ করা সম্ভব হয়ে থাকে যার ফলে আপনার পরিবারে আসবে কাঙ্ক্ষিত সুখ ও শান্তি। আর এই পরিবর্তন আনতে হবে সন্তানধারণের অনেক আগে থেকেই।
আসুন জেনে নেয়া যাক বন্ধ্যাত্ব হওয়ার কিছু কারণ সমুহঃ-
ধূমপান
যারা সন্তান চাচ্ছেন কিন্তু ধূমপান এর থেকে পরিত্রাণ নিতে পারছেন না, তাদের জন্য ধূমপান হয়ে উঠতে পারে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণের অন্যতম বাঁধা। যদি আপনি কিংবা আপনার সঙ্গী ধূমপান করে থাকেন, তাহলে এই অভ্যাসের জন্য গর্ভধারণে অক্ষমতাসহ নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে পারেন যা আপনাকে সন্তান জন্মদানে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
গবেষণা বলছে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ধূমপায়ীদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের পরিমাণ দেখা যায় অধূমপায়ীদের তুলনায় দ্বিগুণ বেশি। একজন ধূমপায়ী প্রতিদিন যতগুলো সিগারেট খাচ্ছেন, তার ঝুঁকি ততই বাড়ছে।
যেসব নারীরা ধূমপান করেন তাদের গর্ভধারণে অধূমপায়ী নারীদের চেয়ে বেশি সমস্যা হয়। আমাদের পরোক্ষ ধূমপান থেকেও নিজেকে বাঁচাতে হবে। এক কথায় বলা যায় আমাদের ধূমপান সংগঠিত এলাকা পরিত্যগ করতে হবে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য।
এই ধূমপানের কারনে মহিলা ও পুরুষের যৌন হরমোন ক্ষরণের মাত্রা কমায় ও স্পার্ম কাউন্টও কমিয়ে দেয়। পুরুষ ও নারী উভয়ের ক্ষেত্রেই তাই ধূমপান বর্জনীয়।
ওজন
ওজন দ্বারা আপনার নানাবিধ যৌন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়া। সকলের ডায়েট মেনে চলা, দৈনিক ব্যায়াম করা, কিছু হালকা শারীরিক কসরতকে রাখতেই হবে আমাদের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডের তালিকায়। পুরুষের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওজন স্পার্মের সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার ঝুকি বেশি থাকে। এছাড়া নানাবিধ যৌন সমস্যাকেও ডেকে আনে অতিরিক্ত শারীরিক ওজন।
অ্যালকোহল
অ্যালকোহল একজন মানুষের যৌন ক্ষমতাকে নষ্ট করে দিতে পারে খুব দ্রুত। অ্যালকোহল গ্রহণের ফলে আমাদের দেহের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যায়।তাই মদ্যপানের কুফল সম্পর্কে আমাদের অবগত হতে হবে এবং মদ্যপান থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।
টিউমার
বন্ধ্যাত্ব হওয়ার জন্য টিউমার একটি অন্যতম প্রধান কারণ। শরীরে যদি টিউমার উপস্থিত থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং এর সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে। টিউমারের কারণেও শরীরে স্পার্ম কাউন্ট কমে যায়, যার ফলে বন্ধ্যাত্ব হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বেড়ে যায়।
সঠিক সময়ে বিবাহ করা
আজকাল আমাদের দেশে ছেলে-মেয়ে উভয়েই দেরিতে বিয়ে করেন, ফলে পরিবার পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে অনেক দেরি হয়ে পড়ে। দু’জনের বয়স ৩৫-এর বেশি হয়ে গেলে বন্ধ্যাত্বের রিস্ক ফ্যাক্টর বেড়ে যায় অনেক ক্ষেত্রেই। তাই বিয়ে বা পরিবার পরিকল্পার দু’টোর ক্ষেত্রেই আমাদেরকে অধিক সচেতন হতে হবে। তাই আমাদের সকলের উচিত সঠিক সময়ে ও বয়সে বিয়ে করা।
হাঁটাচলা করা
নিয়মিত হাঁটাচলার অভাবে আমাদের শরীরে নানান সমস্যার পাশাপাশি বন্ধ্যাত্ব হওয়ার ঝুকিও বেড়ে যায়। আজকাল বেশির ভাগ অফিসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করতে হয়। ওঠা-হাঁটা কম হওয়ার কারণেও বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে।