দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা গ্রহণের ডিজিটাল নিবন্ধন ব্যবস্থা ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ এবং ওয়েব পোর্টালে সাইবার হামলা চালানো হয়েছে।
সম্প্রতি অন্তত ১০টি দেশে হতে একযোগে এই হামলা করা হয়েছে সুরক্ষা অ্যাপে। এই হামলাকে ‘ডিনাইয়াল অব সার্ভিস অ্যাটাক’ কিংবা সেবা বাধাদানে আক্রমণ বলা হচ্ছে। সে কারণে টিকার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটে। তবে বাংলাদেশী দক্ষ বিশেষজ্ঞ দল বিদেশীদের সেই হামলা রুখে দিতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশী দক্ষ বিশেষজ্ঞরা হামলা রুখতে পারায় ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করা ৩ কোটির বেশি নাগরিকের তথ্য নিতে ব্যর্থ হয় হ্যাকাররা। পরে জিও ফেন্সিং (ভূ-বেড়া) চালুসহ অন্যান্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আগের থেকে আরও সুরক্ষিত করা হয়েছে এই ‘সুরক্ষা’ রেজিস্ট্রেশন সেবাকে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সূত্র জানিয়েছে যে, ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ চালু করার পর হতেই বেশ কয়েক দফায় হামলা করা হয় অ্যাপটিতে। সিস্টেম হ্যাক ও ক্ষমতার থেকে বেশি হিটের মাধ্যমে নিবন্ধন ব্যবস্থা অকার্যকর করার চেষ্টা করা হয়। গত ১২ ও ১৩ আগস্ট সবচেয়ে বড় আক্রমণটি করা হয়েছে। তখন অ্যাপের ক্ষমতার থেকে কয়েকগুণ বেশি হিট করা হয়েছিলো। এসবের বেশিরভাগই করা হয় রাত ১০টা হতে ১২টার মধ্যে।
আইসিটি বিভাগ আরও জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টায় ১০টি দেশ থেকে মোট ৬ কোটি ১৬ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৭টি হিট ও ১৪ আগস্ট আবারও ৩ কোটি ৩২ লাখ ৯৯ হাজার ১৩৫ বার হিট আসে। বাংলাদেশসহ হাঙ্গেরি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত এবং ফিলিপাইনের হ্যাকাররা হিট করে অ্যাপটিতে। তবে পরে জিও ফেন্সিং চালু হলে উল্লেখযোগ্য হারে হিট কমে আসে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) পরিচালক (সিএ অপারেশন ও নিরাপত্তা) তারেক এম বরকতউল্লাহ ‘সুরক্ষা’ সেবায় সাইবার আক্রমণের বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, গণটিকার ক্যাম্পেইনের সময় আক্রমণ শুরু হয়। সেই সময় আমাদের সক্ষমতার থেকেও বেশি হিট এসেছিল। এতে আমাদের ব্যবহারকারীরা সিস্টেমটি ধীর গতি পাচ্ছিলেন ও এসএমএস আসতে সময়ও লেগেছিল। তবে হ্যাকাররা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করতে ব্যর্থ হয়। আমরা বিষয়টি সমাধান করেছি। হিটের সক্ষমতা প্রতি সেকেন্ডে ৫০ হাজার হতে বৃদ্ধি করে তা ১ লাখ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জিও ফেন্সিং-এর মাধ্যমে দেশের বাইরে হতে আসা অস্বাভাবিক হিট বন্ধও করা হয়েছে। তথ্যসূত্র: আরটিভি অনলাইন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।