দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক সময় পর্দায় ‘মিস্টার বিন’ হয়েছিলেন রোয়ান অ্যাটকিনসন। তারপর থেকে এই ব্রিটিশ তারকার আসল নাম ভুলেই গেছেন সবাই। তিনি যা–ই করুন না কেনো, নামের আগে জুড়ে দেওয়া হয় ‘মিস্টার বিন’! ৭০ বছর বয়সী এই অভিনেতা এবার ফিরলেন নতুন আরেকটি সিরিজ নিয়ে।

বিশ্বের খ্যাতিমান অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসনকে এবার দেখা গেলো নতুন কমেডি সিরিজ ‘ম্যান ভার্সেস বেবি’তে। সিরিজটি গত বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে।
এটি মূলত ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ম্যান ভার্সেস বি’র পরবর্তী সিরিজ। এখানে তাকে আগের সিরিজের মতোই দেখা গেছে ট্রেভর বিংলি চরিত্রটিতে।
এর আগের সিরিজে নানা ঝঞ্ঝাটে বিংলি। এবার অবশ্য তুলনামূলকভাবে শান্ত। কাজ করেন একটি স্কুলের কেয়ারটেকার হিসেবে। তবে বড়দিনের সময় এক লোভনীয় পেন্টহাউসের কাজ তাকে আবার টেনে আনে আগের ঝামেলাতে। স্কুলের অনুষ্ঠান শেষে যখন কেও ‘বেবি জিসাস’কে নিতে আসে না, ঠিক তখনই ছুটির দিনগুলোতে ট্রেভরের সঙ্গী হয়ে ওঠে এক অপ্রত্যাশিত অতিথি।
মুক্তির পূর্বে সিরিজটি নিয়ে ‘মিস্টার বিন’ ভক্তদের আগ্রহ থাকলেও সমালোচকদের কাছে তেমন একটা পাত্তা পায়নি সিরিজটি। বেশির ভাগই এটিকে গড়পড়তা বলেই রায় দিয়েছেন। যদিও ট্রেভর বিংলি চরিত্রটি গড়া হয়েছে ঠিক মিস্টার বিনের আদলে। দুজনের মধ্যে মিলের কোনো অভাব নেই। বিনের মতো বিংলিও সামান্য বিরক্তিকর বিষয়কে তারা এমন উন্মাদনা নিয়ে মোকাবিলা করেন, যা শেষ পর্যন্ত আত্মবিনাশীও হয়ে ওঠে।

‘ম্যান ভার্সেস বি’-তে দেখা গিয়েছিল বিংলিকে যে বাড়িটি সে মূলত পাহারা দিচ্ছিলো, সেখান থেকে একটি মৌমাছিকে তাড়াতে বিংলি শেষ পর্যন্ত ভুয়া বিস্ফোরকভর্তি মৌচাক বানিয়ে ফেলেন। ঠিক মিস্টার বিনের মতো; যার জীবনটাই যেনো ছোটখাটো সমস্যার জন্য আজব সব সমাধান খোঁজার এক অবিরাম অনুশীলন বলা যায়।
দুজনেই এক অর্থে করুণ এক চরিত্র। বিন- কারণ, সে আসলে নিজেই এক চলমান বিপর্যয়। অপরদিকে বিংলি- কারণ, সে নিঃসঙ্গ, অর্থকষ্টে জর্জরিত এবং চরম অদক্ষতার কারণে একের পর এক চাকরি হারিয়েছেন। সবচেয়ে বড় মিলটি অবশ্যই রোয়ান অ্যাটকিনসন নিজেই, যিনি এই দুই চরিত্রকেই দিয়েছেন তার চেনা সেই চটপটে অথচ বেখাপ্পা শারীরিক কৌতুকের অঙ্গ-ভঙ্গিতে।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান সিরিজটির রিভিউতে লিখেছে যে, ‘যতোটা মসৃণভাবে সম্ভব, সিরিজের ঘটনাপ্রবাহ ততোটাই এগোয়। ভুলে গেলে চলবে না যে, বিংলি একজন স্নেহশীল বাবা- তাই শিশুর যত্ন কীভাবে নিতে হয়, তা সে মোটামুটি জানে। তবে এই নতুন দক্ষতার কারণে সিরিজে স্ল্যাপস্টিক এবং হাসির দৃশ্য আশানুরূপভাবে কম। বিংলি অনায়াসেই বিশাল এক ক্রিসমাস ডিনার বানিয়ে ফেলেন- ঘাম ঝরানোর প্রয়োজনই পড়ে না। এই সিরিজ আসলে সবচেয়ে গতানুগতিক ভঙ্গিতে বড়দিনের আনন্দই দিতে চায়। উৎসবের মিলনমেলার বার্তাটি এমনভাবে পরিবেশনভাবে করে, যা একসময় দমবন্ধ করা মনে হয়।’
অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসন সম্প্রতি লন্ডনে ‘ম্যান ভার্সেস বেবি’র বিশেষ প্রদর্শনীতে হাজির হয়ে কথাও বলেন তাঁর অভিনীত ‘মিস্টার বিন’ চরিত্রটি সম্পর্কে। এই অভিনেতা জানান, ‘মিস্টার বিন’কে তার পছন্দ নয়। রোয়ানের ভাষ্যে, চরিত্রটি ‘স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক এবং নৈরাজ্যবাদী’। অ্যাটকিনসন আরও বলেন, ‘একজন মানুষ হিসেবে আমি মিস্টার বিনকে মোটেও পছন্দ করি না। নিশ্চিতভাবেই তার সঙ্গে কখনই ডিনারে বসতে চাইবো না।’
তবে একই সঙ্গে এও বোয়ান যোগ করেন, ‘একজন চরিত্র হিসেবে আমি অবশ্য তাকে পছন্দ করি। কারণ, সে হয়তো অনেকটাই সেই দশ বছর বয়সী আমার মতোই- শিশুসুলভ স্বার্থপরতা, একটু বিচিত্রভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা। তবু আমি তাকে আমার ঘরে চাইবো না।’
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে যাত্রা শুরু করার পরই মিস্টার বিন হয়ে উঠেছিল যুক্তরাজ্যের অন্যতম বড় একটি কমেডি সিরিজ। ১৯০টিরও বেশি দেশে বিক্রি হয়েছে এই সিরিজটি। ইউটিউবে মিস্টার বিনের চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লাখেরও বেশি ও মোট ভিউ ছাড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটির বেশি।
# ডেডলাইন, দ্য গার্ডিয়ান ও পিংকভিলা অবলম্বনে প্রথম আলো।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org