দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিন্দুমাত্র অপরাধ নাই গাছটির তারপরও ১১৮ বছর ধরে বন্দি রয়েছে ছবির এই বটগাছটি! বড়ই বিচিত্র এই পৃথিবী।
যুগে যুগে রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন হলেও ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি ছবির এই গাছটির। শত বছর পেরিয়ে গেছে তার এই শেকল জীবন!
এমন একটি বিষয় তুলে ধরে পাকিস্তানের জনপ্রিয় পত্রিকা ডন তারই একটি ছবি ছেপেছে শুক্রবারের সংখ্যায়।
এই বটগাছটির অবস্থান পাকিস্তানের পেশোয়ারে। ঘটনাটি ব্রিটিশ শাসনামলের। ১৮৯৮ সালে লান্ডি কোটাল সেনা ক্যান্টনমেন্টে এই গাছটিকে গ্রেফতার করে। কোনো বিচার ছাড়াই তখন হতে বন্দি রয়েছে এই গাছটি। প্রচলিত রয়েছে যে, ওই ক্যান্টনমেন্টে এক ব্রিটিশ সেনা অফিসার নাকি নেশার ঘোরে হাঁটার সময় দেখতে পান যে, বটগাছটি তার দিকে এগিয়ে আসছে। ব্যস, মেস সার্জেন্টকে হুকুম দিলেন- এরেস্ট করো একে। যা হুকুম, সে মতেই কাজও হলো। পেয়াদারাও ছুটে এসে আষ্টেপৃষ্টে শেকল পরিয়ে দিলো গাছটিকে।
আর তখন থেকেই শেকলে বাঁধা রয়েছে বেচারা বটগাছটি। ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটেছে বহু পূর্বেই। দেশ স্বাধীন হয়েছে। তারপর আগমন ঘটেছে আরও কতো সরকারের। তবে গাছটির ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এতোদিন পরও ওই বটগাছে বোর্ড ঝুলছে, তাতে লেখা ‘আই অ্যাম আন্ডার অ্যারেস্ট’!
অনেকেই অবশ্য দাবি করেন, পাক-আফগান সীমান্তের লান্ডি কোটালের উপজাতি সম্প্রদায়কে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বুঝিয়ে দিতেই নাকি বটগাছকে গ্রেফতার করার অভিনব নির্দেশ দেয় ব্রিটিশরাজ। যাতে করে উপজাতিরা বুঝতে পারে, দরকারে এমন শাস্তি তাদেরও দেওয়া হতে পারে। যদি সত্যিই তা হয়েও থাকে, তাহলে এখনও গাছটিকে কোন উদ্দেশ্যসাধনে বেঁধে রাখা হয়েছে? তার কোনো উত্তর নেই কারও।
রহস্যঘেরা বন্দি গাছটিকে দেখতে এখন সেখানে আসেন অনেকেই। হয়তো গাছটি তাদের কাছে মুক্তির আকুল আবেদন জানায়। তবে সে আবেদন কারো কানে কোনোদিনই পৌঁছায় না! আদতেও কী কোনো দিন কারও কানে পৌঁছাবে বন্দি ওই গাছটির আর্তি?