দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনিদ্রা মানুষের জন্য দুঃস্বপ্নের মতই বিষয়। শারিরীক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য সুনিদ্রার কোন বিকল্প নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো সুনিদ্রার জন্য ঘুমাতে যাওয়ার আগে কী কী খাবার গ্রহণ পরিহার করা উচিত তা জেনে সেগুলো এড়ানো, সেরকম ১০ টি খাবার সম্পর্কে আপনাদের জানানো হলো।
১.আইসক্রীমঃ সুনিদ্রার জন্য ঘুমানোর পূর্বে অত্যধিক সুগার সমৃদ্ধ খাবার যেমন আইসক্রীম না খাওয়া বাঞ্চনীয়। সুগার মানুষের এনার্জি লেভেল বৃদ্ধি করে এবং পাশাপাশি অত্যধিক সুগার চর্বিতে রুপান্তরিত হয়। সুতরাং সুনিদ্রার জন্য ঘুমানোর আগে আইসক্রীম গ্রহণ অনিদ্রার রোগী এবং স্বাস্থ্য সচেতন উভয়ের জন্যই খারাপ।
২. ব্লাক চকলেটঃ চকলেট জাতীয় খাবারে ক্যাফিন এবং থ্যাব্রোমিন থাকে। এই দুইটি বস্তু এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ যা স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে ফলে রাতে ঘুম আসার সম্ভাবণা কমে যায়। সুতরাং যারা রাতে এই ধরনের চকলেট বা মিল্ক চকলেট খেতে অভ্যস্ত, রাতে সুনিন্দ্রার জন্য এই অভ্যাস পরিত্যাগ করাই ভালো।
৩.পাস্তাঃ পাস্তা যদিও সুন্দর এবং ভোজনরসিকদের জন্য প্রিয় খাবার কিন্তু ইহা রক্তের সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি করে। রক্তের অতিরিক্ত সুগার অনিদ্রার জন্য দায়ী সুতরাং সুনিদ্রার জন্য রাতে পাস্তা বর্জন করাই উচিত।
৪.পিজাঃ নিয়মিত পিজা খেলে পাচনতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয় আর পিজার সাথে গ্রহণকৃত টমেটো সস পাকস্থলির এসিডিটির কারণ যা আমাদের অনিদ্রা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং রাতে পিজা না খাওয়াই ভালো।
৫.ক্যান্ডি বারঃ একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘুমানোর পূর্বে ক্যান্ডি বার গ্রহণ করলে, ইহার উচ্চ সুগার লেভেল আমাদের মস্তিষ্কে এক ধরনের কম্পন তৈরি করতে পারে যা আমাদের দুঃস্বপ্ন দেখায় এবং দুঃস্বপ্নের কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সচরাসচর ঘুমানোর পূর্বে আমাদের অনেকের ক্যান্ডি বার খাওয়ার প্রবণতা বাদ দেওয়াই যুক্তিযুক্ত যদি আমরা সুনিদ্রা পেতে চাই।
৬.শস্যদানাঃ সব ধরনের শস্যদানা নয় কিছু কিছু শস্যদানা রক্তের সুগারের লেভেল বৃদ্ধি করতে পারে যা আগেই বলা হয়েছে অনিদ্রার সৃষ্টির কারণ। সুতরাং রাতে ঘুমানোর পূর্বে কুড়মুড়ে শস্যদানার স্ন্যাক বর্জন করা উচিত।
৭.রসুনঃ যদিও রসুন আমাদের হার্টের জন্য খুব উপকারী। তবুও যাদের এসিডিটি আছে তাদের রাতে রসুন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ না করাই উচিত কারণ কে বা চায় এসিডিটির সমস্যার কারণে নিজের রাতের ঘুমের বিঘ্ন ঘটাতে।
৮. সেলারিঃ সেলারি (এক ধরনের শাক) হচ্ছে মূত্রবর্ধক সবজি। ইহা আমাদের দেহের ভিতরে পানি প্রবাহে ধাক্কা দেয় ফলে আমাদের মূত্র বর্জনের হার বেড়ে যায়। সুতরাং এই সবজি গ্রহণ দিনের বেলায় গ্রহণ সঠিক হলেও সুনিদ্রার জন্য ঘুমানোর পূর্বে না খাওয়াই বুদ্ধিমানের পরিচায়ক।
৯.এলকোহলঃ ধারণা করা হয়, রাতে এলকোহল গ্রহণে অনিদ্রার সমস্যা দূর করা যায়। আসলে এটি একটি ভুল ধারণা, এলকোহল শরীর যতক্ষণ শরীরে কাজ করে ততক্ষণ ভালো ঘুম হতে পারে, কিন্তু নেশা কেটে গেলে ঘুম আর আসবে না। সুতরাং রাতে ঘুমানোর পূর্বে এলকোহল গ্রহণ অনুচিত।
১০.লাল মাংসঃ লাল মাংসে প্রচুর আয়রন এবং ট্রিপ্টোফেন থাকে যা ঘুম ভাব নিয়ে আসে কিন্তু আবার এতে প্রচুর চর্বি এবং প্রোটিন থাকে যেসবের হজম জনিত কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এই বিপরীতমুখী ধর্মের কারণে আমাদের উচিত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া সেটা হচ্ছে ঘুমানোর পূর্বে এই খাবার গ্রহণ না করা।
অনিদ্রার কারণে মানুষ শারিরীক এবং মানসিক দুই প্রকারেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সুতরাং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের সাথে উপরে উল্লেখিত খাবার অবশ্যই পরিহার করা উচিত এবং অবশ্যই ঘুমানোর দুই ঘন্টা পূর্বে খাবার গ্রহণের অভ্যাসও করা উচিত।
তথ্যসূত্রঃ ম্যানস এক্সপি