দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের পশ্চিমাঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর শিবিরে নিরাপত্তা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে! সেখানে আটকাবস্থায় লাখ লাখ উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায় বসবাস করছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে যে, চীন তার পশ্চিমাঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর শিবিরে মুসলমান অধ্যুষিত জিনজিয়াং প্রদেশের নিরাপত্তার খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করেছে। সেখানে আটক রয়েছে লাখ লাখ উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জেমসটন ফাউন্ডেশনের এক হিসাব মতে, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ২০১৬ সালের চেয়ে ওই অঞ্চলে ব্যয় ২১৩ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে চীন। যা অনেকটা অস্বাভাবিক অংকের বলেই মন্তব্য করছেন অনেকেই।
চীন সরকারের দাবি হলো, তারা প্রশিক্ষণ খরচ বাবদ এই খরচ করছেন। তবে জার্মান গবেষক আর্ডিয়ান ২০১৭ সালের বাজেট রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন যে, চীন সরকার যেভাবে প্রশিক্ষণের কথা বলছে, বাস্তবে ঠিক তার উল্টো। মূলত জিনজিয়াং প্রদেশে ভোকেশনাল ট্রেনিং বাবদ খরচ আরও ৭ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে।
ইতিপূর্বে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ হতে বেশ কয়েকবার আটক উইঘুর মুসলিম গোষ্ঠির নিরাপত্তা খরচ ও সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করা হয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে স্যাটেলাইটের মধ্যদিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে জানানো হয়। এখানে ২০ বিলিয়নের মতো নিরাপত্তা খরচ বাড়ানোর বিষয়টি বলা হয়েছে।
জানানো হয়েছে, মূলত আটকে রাখা উইঘুর মুসলিমদের জন্য কারাগার নির্মাণ ও নিরাপত্তার জন্যই এই ব্যয় আরও বাড়ানো হয়েছে।
সন্ত্রাস দমনের অজুহাত দেখিয়ে চীন সরকার বেশ আগে হতেই উইঘুর সম্প্রদায়ের লোকজনকে আটক করে বিশেষ বন্দিশিবিরে আটকে রেখেছে। বিষয়টি নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আরও বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন চীন সরকারের কাছে বেশ কয়েকবার উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, চীনের এই উইঘুর সম্প্রদায় মূলত তুর্কী বংশোদ্ভূত মধ্য এশিয়ার একটি নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী। জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত প্রায় ৪৫ ভাগ লোকই হলো এই উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষ। এরা মুসলমান হওয়ায় এদের জীবনে নেমে এসেছে এমন অমানিষা। বিভিন্ন সময় এই উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলে আসছে নানা রকম অপপ্রচার। এই উইঘুর সম্প্রদায়কে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টাও করা হয়েছে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে। যে কারণে জাতিগত নিধনের মতো ঘটনাও ঘটছে অহরহ। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব সময় সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে। যে কারণে চীন সরকার খুব বেশি কিছু করতে পারেনি এই উইঘুর সম্প্রদায়কে।