দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ দুই বছর আগে এক সাংবাদিক খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগের চিন্তা করছেন মাল্টার প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মাস্কট। রাজনৈতিক এবং আইনি সংকট বাড়তে থাকায় মাস্কট তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে এই চিন্তার কথা জানিয়েছেন।
তার একজন মুখপাত্র এই বিষয়ে মুখ না খুললেও শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগামী রবিবার (১ ডিসেম্বর) নির্ধারিত মাস্কটের একটি অনুষ্ঠান ইতিমধ্যেই বাতিল করেছে তার দল লেবার পার্টি। সেখানে দলীয় নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী মাস্কটের বক্তব্য রাখার কথা ছিল।
অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের জন্য দেশটির নন্দিত সাংবাদিক কারুয়ানা গালিজিয়া ২০১৭ সালের ১৬ অক্টোবর পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গাড়ি বোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন। সাংবাদিকরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে এলেও সরকার মামলার তদন্তকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইতিমধ্যেই এই হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত সপ্তাহে আটক করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী মাস্কটের ‘ডান হাত’খ্যাত চিফ অব স্টাফ কেইথ স্কেমব্রিকে। তবে স্কেমব্রি কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন। পরে পুলিশ জানিয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকে রাখার কোনো প্রয়োজন নেই।
সাংবাদিক গালিজিয়া পরিবারের চোখে সন্দেহভাজন স্কেমব্রিকে বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তখন থেকেই ওই পরিবার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। তাদের সঙ্গে সোচ্চার হয়েছে দেশের সাধারণ জনগণ।
গালিজিয়া পরিবার বলছে যে, হত্যা মামলায় প্রধানমন্ত্রীর তিন সহযোগীর সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়েছে বিধায় এই মামলা দেখভালের দায়িত্বে তিনি থাকতেই পারেন না, তার অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
‘এলিট’দের প্রধানমন্ত্রী খ্যাত মাস্কট এর আগেও অবশ্য পদত্যাগের দাবির মুখে পড়েছিলেন। তখন তিনি সে দাবি নাকচ করে বলেছিলেন যে, আমি আমার দায়িত্ব ছেড়ে কখনও যেতে পারি না। মাল্টার অটল নেতৃত্ব প্রয়োজন। আমি দেশের স্বার্থে নীতি-নির্ধারণী ভূমিকা পালন করে যাবো, তবে (অপরাধী) কাওকে আমি রক্ষাও করবো না।
এদিকে গালিজিয়াকে হত্যার দায়ে বিচার চলছে তিন জনের। তবে এই তিন জনকে ভাড়া করার পেছনে আসলে কে জড়িত ছিল, সেটি এই দু’বছরেও বের করতে পারেনি দেশটির সরকার। সেজন্যই গালিজিয়ার পরিবার দাবি করে আসছে যে, সরকারই নিজ স্বার্থে হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দিতে চাইছে।
এদিকে পরিস্থিতি নাজুক বুঝে মাস্কটের মন্ত্রিসভার দুই সদস্য অর্থাৎ দুই মন্ত্রী চলতি সপ্তাহে সরে দাঁড়িয়েছেন। পরিস্থিতি ‘এলিট’ শাসকদের জন্য অশনিসংকেত বলে জানাচ্ছে দেশটির অধিকাংশ সংবাদমাধ্যম। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের চিন্তার খবরও ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।