দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে। করোনার দাপটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকা প্রদান শুরু হলেও এর কার্যকারিতা কতদিন থাকবে তা বলা হয়নি। তবে এবার ফাইজার বললো, ‘করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে হবে প্রতি বছরই’।
লাখ লাখ মানুষ প্রতিদিন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যু ঘটছে হাজার হাজার মানুষের। এক কথায় বলা যায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা বিশ্ব।
এমন এক অবস্থায় এই ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে বিশ্বে আবিষ্কার হয়েছে কয়েকটি ভ্যাকসিন। তবে এসব ভ্যাকসিনের কোনওটি শতভাগ কার্যকর নয়। তবে এর মধ্যে ফাইজার এবং অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বিশ্বব্যাপী আশার আলো জাগিয়েছিল।
এক্ষেত্রে এখন শোনা যাচ্ছে একেবারে এক ভিন্ন কথা। মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলবার্ট বোরলা জানিয়েছেন যে, এখন থেকে প্রতি বছরই করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
সম্প্রতি সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে বোরলা বলেছেন, পুরোপুরোরিভাবে টিকার আওতায় আসতে ফাইজারের তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করতে হবে। এটিও এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়াও এখন থেকে প্রতি বছরই করোনার টিকা নিতে হতে পারে। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি কী ঘটে তা আমাদের দেখতে হবে, কতোদিন পর্যন্ত এমনটি প্রয়োজন হতে পারে সেটিও দেখার বিষয়।
ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, কোথাও সম্ভবত এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো সেখানে তৃতীয় ডোজ প্রয়োজন হলো, কোথাও ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যেও এটি হতে পারে। তারপর আবার সেখান থেকেই টিকা দেওয়া শুরু হলো। প্রতি বছরই টিকা কার্যক্রম চালানো হতে পারে। তবে এই বিষয়গুলো পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া দরকার।
এদিকে করোনা প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই চলছে টিকাদান কার্যক্রম। প্রথম ডোজ শেষ হয়ে কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ। দুই ডোজ নেওয়ার পরও টিকাগ্রহণকারী কতোদিন সুরক্ষিত থাকবেন তা নিয়ে অবশ্য এখন পর্যন্ত কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি গবেষকরা।
এ মাসের শুরুর দিকে টিকার সুরক্ষা নিয়ে গবেষণার বরাত দিয়ে ফাইজার জানিয়েছে, তাদের টিকার কার্যকারিতা ৯১ শতাংশেরও বেশি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এটি ৯৫ শতাংশের ওপরও সুরক্ষা দিতে পারবে। দুই ডোজ টিকা গ্রহণের পর যে কেও ৬ মাসের বেশি সময় সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।