দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজধানীর চামেলীবাগে নিজ বাসায় খুন হয়েছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান (৪৮) ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান (৪২)।
ঘটনার পর থেকে ওই দম্পতির বড় মেয়ে ঐশি (১৭) নিখোঁজ রয়েছেন। ঐশির কক্ষের বাথরুম থেকে চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় লাশ দু’টি উদ্ধার করা হয়। দু’জনের শরীরেই উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২ নং চামেলীবাগের বহুতল ভবনের ৬ষ্ঠ তলার বি-৫ নম্বর ফ্ল্যাটে এই দম্পতিকে খুন করা হয়। বুধবার গভীর রাতে যে কোন সময় এই খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। শুক্রবার দুপুরের পর তালাবদ্ধ ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে আশেপাশের বাসিন্দারা পুলিশকে খবর দেন। ঘটনার পর সিআইডি’র ক্রাইমসিন শাখা হত্যার আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ব্যাপারে পল্টন থানার ওসি গোলাম সারোয়ার জানান, উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেই তাদের হত্যা করা হয়েছে। তবে কারা এবং কেন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।
ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান ১৯৮৯ সালে সাব-ইন্সপেক্টর হিসাবে পুলিশে যোগদান করেন। ময়মনসিংহে তার বাড়ি। সর্বশেষ তিনি এসব্থির রাজনৈতিক শাখায় ইন্সপেক্টর হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তার মেয়ে ঐশি রাজধানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে অধ্যয়নরত। ছেলে ঐহি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের ২য় শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-মহাপরিদর্শক মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, বুধবার রাত ১১ টার দিকে মাহফুজুর রহমান অফিস করে বাসায় ফিরেন। ওই রাতেই সম্ভবত এই ঘটনা ঘটে। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, শুক্রবার সকালে মাহফুজের মেয়ে ঐশি কাকরাইল মোড় থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে তার ছোট ভাই ঐহিকে তাদের খালার বাড়িতে পাঠায়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার দিকে ঐশি তার খালুকে ফোনে জানায় যে, তাদের বাবা-মা ঝগড়া করে বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন। এ কারণে সে তার ছোট ভাইকে নিয়ে খালুর বাসায় আসতে চায়।
এ ব্যাপারে ঐহি পুলিশকে জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে তার বোন তাকে ঘুম থেকে তুলে জানায় যে, বাবা-মা বাসা থেকে চলে গেছে। এরপর তারা ভাই-বোন বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে। তারা তাদের খালুর বাসায় যেতে চেয়েছিল। কিন্তু তার বোন ঢাকার বিভিন্নস্থানে ঘুরিয়ে দুপুরে তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ওই ফ্ল্যাটে তিনটি কক্ষ। একটিতে মাহফুজ দম্পতি, একটিতে মেয়ে ঐশি ও অন্যটিতে ঐহি থাকে। মাহফুজুর দম্পতির ঘরের মেঝে ও বিছানা রক্তে ভেসে আছে। সম্ভবত বিছানার ওপর তাদের খুন করে লাশ চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে টেনে ঐশির ঘরের বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে মাহফুজ দম্পতির ঘরের জিনিসপত্র তছনছ করা হলেও ঐশির ঘরের জিনিসপত্র অক্ষত রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কাজের বুয়া এবং নিহতের মেয়ে ঐশীকে আটক করার চেষ্টা চলছে। তাদের পাওয়া গেলে খুনের রহস্য উদঘাটন হতে পারে। লাশের পাশ থেকে রক্তাক্ত ছুরিসহ ২২ ধরনের আলামত উদ্ধার করেছে পুলিশ।