দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে পুরো বিশ্বে। তবে এই ওমিক্রন ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারছে না বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ও এর সংক্রমণ কতটুকু মারাত্মক তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। গবেষণা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
প্রাথমিকভাবে গবেষকরা দাবি করেছেন, ওমিক্রনের কারণে মৃদু সংক্রমণ হওয়ায় মৃত্যুঝুঁকিও কম। অন্যান্য ধরনের তুলনায় ওমিক্রন ফুসফুসে সংক্রমণ তৈরি করে থাকে ১০ গুণ ধীর গতিতে।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে চলমান গবেষণাগুলো এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে এই ধরন করোনার অন্যান্য ধরন থেকে যে অতি সংক্রামক সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখছেন যে, ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কতোটা মারাত্মক হতে পারে। হংকং ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ওমিক্রন নিয়ে করা গবেষণার খসড়া প্রকাশও করেছেন।
এই গবেষণায় বলা হয় যে, শ্বাসনালীতে করোনার ডেল্টা ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের ৭০ গুণ বেশি রূপান্তর ঘটে থাকে। তবে এই ধরনটি ফুসফুসে তেমন সংক্রমণ ঘটাতে পারে না।
গবেষকরা মনে করেন, শুরুর দিকে ছড়িয়ে পরা করোনার তুলনায় ওমিক্রন ফুসফুসে সংক্রমণ তৈরি করে অন্তত ১০ গুণ ধীর গতিতে। এতেই বুঝা যায় ওমিক্রনের সংক্রমণ খুব মৃদু।
এই গবেষণার নেতৃত্বে থাকা ডক্টর মাইকেল চ্যান বলেছেন, করোনা ভাইরাসটি ফুসফুসে সংক্রমণ সৃষ্টি করার পর মারাত্মক মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টি হয়।
সাধারণত সংক্রমণ ফুসফুসে না হয়ে শ্বাসনালীর উপরের অংশে হলে ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে। ওমিক্রনের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এটি শ্বাসনালীর ওপরের অংশেই সংক্রমণ ঘটায়।
তবে প্রাপ্ত ফলাফল দেখে ডক্টর মাইকেল চ্যান জানিয়েছেন, এমনটি হলেও এখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার কিছুই নেই। কারণ দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকলে যে কোনো বিপদ হতেই পারে।
ফুসফুসে না হয়ে শ্বাসনালীর ওপরের অংশে ওমিক্রনের সংক্রমণের বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন স্কটল্যান্ডের একদল গবেষক।
এতে বলা হয় যে, ফুসফুসে এক ধরনের প্রোটিন কোষ থাকে। যার নাম হলো টিএমপিআরএসএস টু। অতীতে এই প্রোটিনের মাধ্যমেই করোনা ভাইরাস ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটিয়েছে।
তবে ওমিক্রন টিএমপিআরএসএস টু’র ভেতরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটাতে পারছে না। যার কারণে এই ধরন ফুসফুসে অন্যান্য ধরনের তুলনায় তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারছে না।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।