দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুধে রয়েছে ক্যালশিয়াম, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রণ, ফসফরাস, পটাশিয়ামের মতো খনিজ। প্রায় একই রকম উপাদান রয়েছে ঘি’র মধ্যেও। দুধের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে কী উপকার পাবেন?
আমরা ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি দুগ্ধজাত খাবার একসঙ্গে খেলে নাকি পেটের সমস্যা বেড়ে যায়। কস্মিনকালেও দুধের সঙ্গে দই কিংবা পনির খেতে দেখা যায়নি কাওকে। আবার পাউরুটিতেও একসঙ্গে ঘি ও মাখন দিয়েও খান না কেও। তবে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, দুধের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। দুধের মধ্যে রয়েছে ক্যালশিয়াম, আয়রণ, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান। সেইসঙ্গে, ভিটামিন এ, ডি, বি-৬, ই, কে-র মতো উপাদানও রয়েছে দুধে। অপরদিকে, দুধ থেকেই তৈরি হয় ঘি। যারমধ্যে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে রয়েছে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের অন্যতম একটি বিকল্পই হলো ঘি। এই দুই উপাদান একসঙ্গে মিশালে শরীরে কোন কোন উপকার হবে?
প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়
জানা গেছে, দুধের মধ্যে সামান্য পরিমাণ ঘি মিশিয়ে খেলে অন্ত্রের মধ্যে থাকা টক্সিন দূর করা যায় খুব সহজেই। অন্ত্রের মধ্যে থাকা ভালো ব্যাক্টেরিয়াগুলো পেটের স্বাস্থ্য ও পরোক্ষভাবে হলেও প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে ঘিয়ের মধ্যে। যেটি বার বার খিদে পাওয়ার প্রবণতাকে আটকে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীরচর্চা করেন, তাদের জন্যও এই পানীয় অত্যন্ত ফলদায়ক। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি না গিয়েও শরীরকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছে দিতে সাহায্য করে ঘি মেশানে ওই দুধ।
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য
দূষণ, অযত্ন, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও মানসিক চাপের কারণে ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যও খারাপ হতে শুরু করেছে। তেল, শ্যাম্পু দিয়ে সাময়িক সমস্যা মিটলেও এর ফল সুদূরপ্রসারী নয়। আর মাথার ত্বক, মুখের চাম়ড়ার আর্দ্রতা ধরে রাখতে দারুণভাবে কাজ করে এই দুধ-ঘিয়ের টোটকা।
হাড় মজবুত করার জন্য
আমরা জানি বয়স বাড়লে হাড়ের ক্ষয় হওয়াটা স্বাভাবিক। এটি প্রতিরোধ করতে গেলে কম বয়স থেকেই নিয়মিত যত্ন নেওয়া দরকার। হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ক্যালশিয়াম ও ভিটামিন ডি- দুই-ই পাওয়া যায় দুধ ও ঘি মেশানো পানীয় থেকে। দেহের প্রতিটি অস্থিসন্ধিতে থাকা থকথকে জেলজাতীয় উপাদানের জোগানও দেয় ঘি।
হজমশক্তি বাড়াতে
অনেকেই বলেন, ঘি খেলে গ্যাসের সমস্যাও বেড়ে যায়। পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ঘিয়ের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে থাকে। সেইসঙ্গে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে পেটের অনেক সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org