দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা শহরের সবচেয়ে বড় এবং উন্নত হাসপাতাল হলো আল শিফা হাসপাতাল। কিন্তু এই হাসপাতালটি বর্তমানে এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলের হামলায় এই করুণ অবস্থা হয়েছে।
তবে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী হাসপাতালটি দখলের পর হাসপাতালের চিত্র পুরোপুরিই বদলে যায়।
শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি দল মাত্র এক ঘণ্টার জন্য হাসপাতালটি পরিদর্শন করেছে। এই সময় তারা হাসপাতলের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির চিহ্ন দেখতে পান। হাসপাতালের সামনে রয়েছে একটি গণকবর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮০ জনকে কবর দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী হাসপাতালটি দখল করার পর তাদেরকে বাইরে কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসার কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। বিবিসি জানিয়েছে যে, হাসপাতালটি পরিদর্শন শেষে আল শিফা হাসপাতালকে মৃত্যুপুরী আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্দেশে হাসপাতালে অবস্থানরত বেশিরভাগ রোগী ও উদ্বাস্তু চলে যেতে বাধ্য হয়। এখনও নিরুপায় ৩০০ রোগী এবং উদ্বাস্তু হাসপাতালে রয়ে গেছেন। তাদেরকে অন্যত্র সরানোর জন্য ডব্লিউএইচও কাজ করছে ও ইসরায়েলকে বারবার যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়ে আসছে। পরিদর্শকরা বলেছেন, এখনও যারা হাসপাতালে রয়েছেন তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে হবে।
ইসরায়েলের অভিযোগ করেছে যে, আল শিফা হাসপাতালের ভেতর গোপন সুরঙ্গ তৈরি করেই হামাস অভিযান চালাচ্ছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ অনেকদিন ধরেই আল শিফা দখল এবং লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে আইডিএফ। তবে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে এ পর্যন্ত কোনো প্রমাণই দেখাতে পারেনি তারা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org