দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ৪০-এর পর হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে অল্প বয়স হতেই সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিদিনের কিছু অনিয়ম বাড়িয়ে দিতে পারে অস্টিওপোরোসিসের এই ঝুঁকি। জেনে নিন হাড় ভালো রাখার উপায়গুলো।
বয়স বাড়লে কৃত্রিম রঙে সাদা চুল ঢেকে ফেলা খুবই সহজ কাজ। তবে বয়স বাড়লে হাড়ের ঘুণ ধরা প্রতিরোধ করা মোটেও সহজ কাজ নয়। তখন রোদে ঘোরাঘুরি এবং ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। চুলে রং লাগানোর মতো চটজলদি সমাধান এই ক্ষেত্রে মোটেও সম্ভব নয়। হাড়ের প্রধান উপাদান ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস। তাছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের খনিজ। ঋতুবন্ধের পর মহিলাদের পোস্ট মেনোপজাল অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি অনেকটা বেশি থাকে। তবে এই কথাও ঠিক যে, বেশি বয়সে হাড়ের ক্যালশিয়াম কমে গিয়ে হাড়ে ঘুণ ধরার মতো সমস্যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের হতে পারে। প্রতিদিনের কিছু অনিয়ম বাড়িয়ে দিতে পারে অস্টিওপোরোসিসের এই ঝুঁকি। আজ জেনে নিন, হাড় ভালো রাখার কয়েকটি উপায়।
# হাড়ের ক্ষয় আটকাতে ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবারের উপর জোর দিতে হবে। দুধ, দই, ছানা খাওয়া সবথেকে ভালো, যাদের মিল্ক অ্যালার্জি রয়েছে তাদের সয়াবিনের দুধ বা টোফু খাওয়া দরকার। এছাড়াও ক্যালশিয়াম পাবেন যে কোনও সবুজ শাক সব্জিতে। তাছাড়াও মাছ, চিকেন, ডিম খাওয়া প্রয়োজন।
# সব সময় নিজেকে সচল রাখতে হবে। এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা যাবে না। ঘণ্টাখানেক পর পর চেয়ার থেকে উঠে ঘোরাফেরা করতে হবে। অনেকেই বয়স বাড়লে শরীরচর্চা এড়িয়ে চলেন। ভারী শরীরচর্চা না করলেও হালকা ব্যায়াম নিয়মিতভাবে করতে হবে। সকালে কিংবা বিকেলে হাঁটাহাঁটি করুন। হাঁটুর ও ব্যায়াম করুন।
# ওজন বাড়লে পুরো শরীরের ভার হাঁটুর উপর পড়তে শুরু করবে। তাই হাঁটুর হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে দেয়। এই সমস্যা এড়িয়ে চলতে হলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা ভীষণভাবে জরুরি। তাই কেবল কোলেস্টেরল, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেই নয়, অস্টিওপোরোসিসের হাত থেকেও নিস্তার পেতে ওজন বাগে রাখাটা জরুরি। সেজন্য শরীরচর্চার জন্য সময় বের করতে হবে।
# অতিরিক্ত ধূমপান করলে পুরুষদের টেস্টোস্টেরোন হরমোনের কার্যক্ষমতাও কমে গিয়ে হাড় পলকা হতে শুরু করে দেয়, আবার মদ্যপান করলে শরীরে নতুন হাড় তৈরির পদ্ধতি ব্যাহত হয় বলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। তাই ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলতে হবে। বংশে কারও এই রোগ থাকলেও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
# শরীরে পর্যাপ্ত পানির জোগান না থাকলেও হাড়ের সন্ধিগুলিতে থাকা তরলের মাত্রা কমে যায়। যে কারণে হাড় ভঙ্গুর হতে শুরু করে দেয়। তাই এই সময় বেশি করে পানি খেতে হবে সকলকে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org