দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পিঠের ব্যথার প্রধান কারণ হলো এক জায়গায় অনেকক্ষণ একটানা বসে থাকা। এই সমস্যা দূর করতে অনেকেই মুঠো মুঠো বেদনানাশক ওষুধ খান, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর বিষয় নয়। কীভাবে রেহাই পাবেন? কয়েকটি যোগাসন করলে রেহাই পেতে পারেন।
বর্তমানে আধুনিক যুগ হওয়ায় বেশির ভাগ কাজের জন্যই আমরা ডিজিটাল মাধ্যমের উপরেই নির্ভরশীল। পড়াশোনাই হোক কিংবা বাজারহাট, ব্যাংকের কাজই হোক বা পোশাক কেনাকাটা- সব কিছুই সামলাতে হচ্ছে ফোন বা ল্যাপটপের মাধ্যমে। অফিসে গিয়েও দীর্ঘক্ষণ একটানা একই জায়গায় বসে থাকতে হচ্ছে আমাদের। এইসব কারণেই এখন ঘরে ঘরে পিঠের যন্ত্রণায় ভুগছেন অনেকেই। পিঠের ব্যথার প্রধান কারণই হলো এক জায়গায় অনেকক্ষণ বসে থাকা। এই সমস্যা দূর করতে অনেকেই মুঠো মুঠো বেদনানাশক ওষুধও খেয়ে ফেলেন, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর বিষয় নয়। এই ধরনের পিঠের ব্যথা দূর করতে হলে নিয়মিতভাবে ব্যায়াম করা ছাড়া উপায় নেই। আজ জেনে নিন, পিঠ এবং কোমরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ঠিক কোন কোন আসন করলে ভালো ফল পাবেন।
ভুজঙ্গাসন
এই আসনটি করতে হলে প্রথমেই আপনাকে মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়তে হবে। এরপর হাতের তালু মেঝের উপর ভরদিয়ে পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভরদিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিকে তুলুন। এখন মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যান।
ত্রিকোণাসন
এই আসনটি করতে প্রথমেই আপনাকে দু’টি পা ফাঁক করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এরপর হাত দু’টি দু’পাশে লম্বা করে দিন। বাঁ পাশে শরীর বেঁকিয়ে বাঁ হাত দিয়ে বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করতে হবে। ডান হাত উপরের দিকে সোজা করে রাখুন। তবে হাঁটু ভাঙবেন না। এরপর হাত না ভেঙে সোজা হয়ে দাঁড়ান। একই পদ্ধতিতে ডান হাত দিয়ে ডান পায়ের আঙুল স্পর্শ করতে হবে। প্রতিদিন ৩ বার করে এই আসনটি করুন। তাতে সুফল পেতে পারেন।
ধনুরাসন
এই আসনটি করতে হলে প্রথমে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা যতোখানি সম্ভব পিঠের উপরের দিকে নিয়ে আসুন। এখন হাত দু’টো ঘুরিয়ে পিছনে নিয়ে গিয়ে গোড়ালি শক্ত করে চেপে ধরুন। চেষ্টা করুন, পা দুটো মাথার কাছাকাছি নিয়ে আসতে হবে। এই ভঙ্গিতে বুক, হাঁটু ও ঊরু মাটি হতে কিছুটা উঠে আসবে। পেট এবং তলপেট মেঝেতে রেখে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে ২০ হতে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত থাকুন। এরপর আবার পূর্বের ভঙ্গিতে ফিরে আসুন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org