দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় সব অফিসেই সহকর্মীদের মাঝে এমন দু’এক জনকে পাওয়া যায়, যারা এসি’র ‘অত্যাচারে’ অতীষ্ঠ হয়ে থাকেন। বাকিরা যখন গরমে কাবু, তখনও এই ‘কুল’ কলিগদের দেখা যায় এসি থেকে দূরে, রুমের এক কোণায় জ্যাকেট বা হুডি’র আশ্রয় নিচ্ছেন। বাড়িতে বা বন্ধুদের আড্ডাতেও তাদের হরহামেশাই খুঁজে পাওয়া যায়, এসি’র রিমোটের দখল নিয়ে একেকজন যেনো রীতিমতো যুদ্ধ করে বেড়াচ্ছেন!
পুরোনো ধাঁচের এয়ার কন্ডিশনারে ঠাণ্ডা বাতাস সঞ্চালনের দিক নিয়ন্ত্রণের সুবিধা না থাকায় সরাসরি হিম শীতল বাতাস সংবেদনশীল ব্যবহারকারীদের গায়ে কাঁটার মতো লাগতে পারে। মানুষ অনেক শখ করে বাড়িতে এসি লাগান বাইরের তীব্র গরম ভুলে একটু আরামদায়ক পরিবেশ পাওয়ার জন্য। সেই এসিই উল্টো অস্বস্তির কারণ হয়ে বসলে কারই বা ভালো লাগবে বলুন? এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হালের আধুনিক এসিতে ‘উইন্ডফ্রি’ ধাঁচের ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। তাহলে ঠিক কীভাবে কাজ করে এই উইন্ডফ্রি সুবিধা?
স্বস্তিতে থাকুন, বিদ্যুৎ বিলের লাগামও টেনে ধরুন
নতুন প্রযুক্তির এয়ার কন্ডিশনারগুলো কেনার ক্ষেত্রে বাজারে ক্রেতারা প্রথমেই খোঁজ করেন, এমন একটি অনন্য ফিচার হয়ে উঠেছে উইন্ডফ্রি। সাধারণ এসি’র সঙ্গে এর পার্থক্য হলো, সাধারণ এসি থেকে ঠান্ডা বাতাসের ধারা কিংবা ওয়েভ একেবারেই সরাসরি প্রবাহিত হয়। অপরদিকে, উইন্ডফ্রি কুলিং অসংখ্য ছোট ছোট ছিদ্র কিংবা ‘এয়ার হোল’-এর মাধ্যমে শীতল বাতাস চারদিকে ছড়িয়ে দেয়। শীতল এবং সতেজ বাতাস ধীরে ধীরে চারদিক থেকে পুরো রুমকে সমানভাবে ঠান্ডা করে তোলে। সরাসরি ঠান্ডা বাতাসে অস্বস্তি বোধ করেন এমন ব্যবহারকারীদের জন্য এটি বেশ স্বস্তিদায়ক একটি ফিচার।
আধুনিক এসি’র আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এগুলো অনেকাংশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। বর্তমানে ইলেকট্রনিক অ্যাপ্লায়েন্স কেনার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। ডিজিটাল ইনভার্টার প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এখন বেশিরভাগ এসিই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সাহায্য করে। এটি একটানা ঠান্ডা করা ছাড়াও তাপমাত্রাকে স্থির রাখতে পারে, ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎবিল সাশ্রয় করতে পারে ও পরিবেশগত প্রভাব কমিয়ে আনতে পারে।
চাই ‘বুদ্ধিমান’ এসি
ভেবে দেখুন তো, কর্মব্যস্ত দীর্ঘ একটি দিনের ক্লান্তি শেষে আপনি বাসায় ফিরলেন, আর সঙ্গে সঙ্গেই আপনার ঘরের এসি’টি আপনার পছন্দসই তাপমাত্রা ও সুবিধা অনুসারে নিজ থেকেই চালু হয়ে গেলো?
বর্তমানে এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)’এর ব্যবহার এমন অনেক স্বাচ্ছন্দ্য ও সুবিধার সুযোগ তৈরি করেছে, যা অতীতে কল্পনাও করা যেতো না। নিজেদের নতুন ‘উইন্ডফ্রি’ এবং ‘স্টেপ-আপ’ মডেলের এসিতে এআই, ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে স্যামসাং। ব্যবহার এবং প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে অপারেশনের ধরণ পাল্টাতে পারে এই আধুনিক এসিগুলো, নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীর জন্য দিতে পারে বিশেষায়িত সমাধান। এমনকি ব্যবহারকারী বাসার বাইরে থাকলেও মোবাইল ফোনে স্মার্টথিংস অ্যাপের মাধ্যমে আধুনিক এয়ার কন্ডিশনারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অ্যাপের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ এবং সাশ্রয় সম্পর্কেও জানা যায়। নতুন মডেলের এসিগুলোতে ওয়েলকাম কুলিং, ভয়েস কন্ট্রোল, অটো ফিল্টার কুলিং অ্যালার্ট, মাল্টিপল প্রোগ্রাম স্কেজ্যুলের মতো স্মার্ট ফিচার যোগ করা হয়েছে। এর এ ধরণের এসি প্রি-সেট রেডিয়াস সুবিধার কারণে এসি’র কাছাকাছি আসা মাত্রই স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালুর সুবিধাও দিয়ে থাকে।
এত দামে কিনলেন, টিকবে তো?
হিট এক্সচেঞ্জারের সেরা পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে স্যামসাংয়ের নতুন মডেলের এসিতে শতভাগ কপার কনডেন্সার ব্যবহার করা হয়। এতে আরও রয়েছে প্যাটেন্ট করা ডুরাফিন প্লাস, যা মরিচা প্রতিরোধী আবরণ হিসেবে কাজ করে। তাছাড়াও গ্রাহকদের মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করতে এয়ার কন্ডিশনারের ডিজিটাল ইনভার্টার কম্প্রেসরে ১০ বছরের ওয়ারেন্টিও দিচ্ছে স্যামসাং।
ভাবছেন, এতো চমৎকার সব ফিচারসহ এসি কোথায় পাওয়া যাবে? ওপরের সবগুলো ফিচারসহ সর্বপ্রথম উইন্ডফ্রি এয়ার কন্ডিশনার বাজারে নিয়ে এসেছে শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড স্যামসাং। তাই ঘরে বসে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুভি দেখা, ছুটির দিনে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডাবাজি বা স্রেফ খানিকক্ষণ ঘুমিয়ে নেওয়ার জন্য বাসার পরিবেশ আরামদায়ক করে তুলতে স্যামসাং এসি’র এই সর্বাধুনিক ফিচারগুলোর সুবিধা নিতে পারেন আপনিও। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org