দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি ভরপেটে শরীরচর্চা যেমন সঠিক নয়, ঠিক তেমনি খালিপেটেও শারীরিক কসরত করা ক্ষতিকরও হতে পারে। বেশি পরিশ্রমের শরীরচর্চার সময় শরীরের খুব দ্রুত শক্তিরও প্রয়োজন হয়। তাই জিমে যাওয়ার পূর্বে কোন খাবার খেতে হবে?
শরীর ভালো রাখতে হলে, মেদ কমাতে এবং ঘাম ঝরাতে হবে। তবে শরীরচর্চা করেই যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে কি-ই বা ভালো হবে? ভরপেটে শারীরিক কসরত করা মোটেও ঠিক নয়। তবে খালিপেটেও কী জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করা উচিত? জিমে গিয়ে ওজন ঝরানোর জন্যও পুষ্টি জরুরি। পুষ্টিবিদরা বলেছেন যে, একেবারে খালিপেটে ওজন তোলা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের শরীরচর্চা করা মোটেও উচিত নয়। সেজন্য শক্তির প্রয়োজন। পেট খালি রেখে শরীরচর্চা করতে গেলে ক্লান্তিও ঘিরে ধরতে পারে। তবে ভরা পেটে ব্যায়াম করা মোটেও ঠিক নয়। তাহলে কী খাবেন, কতোক্ষণ আগেই বা খাবেন? সাধারণত ভারি খাবার খাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা পর শরীরচর্চা করা উচিত। পেট ভরা থাকলে ব্যায়াম করতেও অসুবিধা হয়। সেইসঙ্গে শরীরচর্চার আগে তেল মশলাদার খাবার খাওয়া মোটেও উচিত নয়। এর বদলে দ্রুত শরীরকে শক্তি জোগাতে কী খেতে পারেন সেটি জেনে নিন।
প্রোটিন বার
পেশি গঠনের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শরীরে শক্তি জোগাতে প্রোটিন উপযুক্ত। তাই জিমে যাওয়ার ঘণ্টা খানেক পূর্বে একটা প্রোটিন বার খেয়ে নিতে পারেন। বাড়িতেও রকমারি বাদাম, পুষ্টিকর বীজ, খেজুর, ওট্স মিশিয়ে প্রোটিন বারও বানিয়ে নিতে পারেন। সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে একটি পাত্রে সমান করে বিছিয়ে দিয়ে ফ্রিজে ভরে রাখলে জিনিসটি জমাট বেঁধে যাবে। সেখান থেকে টুকরো করে কেটে নিলে হবে।
মিষ্টি আলু ও ব্রাউন রাইস
শরীরচর্চার ফল সঠিকভাবে পেতে হলে খাওয়া-দাওয়ায় প্রোটিন, শর্করা এবং ফ্যাটের ভারসাম্যও জরুরি। জিমে যাওয়ার অন্তত ঘণ্টা তিনেক পূর্বে যদি খান, তাহলে পাতে রাখতে পারেন ব্রাউন রাইস ও মিষ্টি আলু। এতে থাকে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট। এই ধরনের কার্বোহাইড্রেট হজমেও সময় লাগে, এটি ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত হয় । যে কারণে শরীরচর্চার সময় শক্তির জোগানেও ঘাটতি হয় না। সেইসঙ্গে খাদ্য তালিকায় মাছ, মুরগির মাংস কিংবা ডিম যে কোনও একটা রাখতেই পারেন।
অমলেট
ডিমেও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। সেইসঙ্গে থাকে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় আরও অনেক উপাদানও। পেশি গঠনের জন্য অ্যামাইনো অ্যাসিড খুবই জরুরি। ডিমে এর সব কিছু থাকে। পুরো ডিম দিয়েও যেমন অমলেট বানাতে পারেন, আবার কেবল সাদা অংশ দিয়েও অমলেট ভাজা যায়। জিমে যাওয়ার ঘণ্টা খানেক পূর্বে অমলেটও খেতে পারেন। এতে পেট বেশি ভরে যায় না অথচ শরীরের জন্য দরকারি শক্তিও পাওয়া যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org