দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিয়মিতভাবে শরীরচর্চার করার সময় আপনি কী খাবেন, কতোটা খাবার খাবেন এবং কখন খাবেন, তার সামগ্রিক বিন্যাসের উপরে নির্ভর করে আপনার স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতি।
শরীরচর্চা নিয়মিত করলে তখন খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করতে হবে। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরান কিংবা বাড়িতে যোগাসন—শরীরচর্চার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সঠিক খাদ্যাভ্যাস। নিয়মিতভাবে শরীরচর্চার সঙ্গে সঙ্গে কী খাবেন, কতোটা খাবার খাবেন ও কখন খাবেন তার সামগ্রিক বিন্যাসের উপরে নির্ভর করে স্বাস্থ্যের সার্বিক উন্নতি। এখন যে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়, তা হলো শরীরচর্চার পূর্বে খাওয়া উচিত নাকি পরে। অনেকেই ভাবেন যে, খালি পেটে ব্যায়াম করাই ভালো। তবে পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যায়ামের আগে-পরে খাবারে প্রোটিন, শর্করা, ফ্যাট, ভিটামিন ঠিক মাত্রায় না থাকলে ক্ষতি হবে বরং শরীরেরই।
ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর পরামর্শ হলো, সকাল সকাল শরীরচর্চা করলে ব্যায়াম শুরুর অন্তত ১০-১৫ মিনিট পূর্বে শুকনো ফল বা বাদাম জাতীয় খাবার খেতেই পারেন। সন্ধ্যার সময় শরীরচর্চা করতে চাইলে, বিকেলের খাবার খেতে হবে তার অন্তত এক ঘণ্টা পূর্বে।
ব্যায়াম শুরুর পূর্বে পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি হলে পেশিতে টান লাগার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। মনে রাখবেন, শরীরচর্চার পূর্বে চা কিংবা কফি জাতীয় কোনো পানীয় পান করা মোটেও উচিত নয়।
ব্যায়ামের পর
# ব্যায়াম করলে ঘামের সঙ্গে শরীর হতে অনেকটা পানি বেরিয়ে যায়। যে কারণে শরীর আর্দ্র রাখতে যথেষ্ট পরিমাণ পানি খাওয়া প্রয়োজন। প্রতিদিন শরীরচর্চার পর কিছুক্ষণ অন্তর পানি খেতে হবে।
# বাড়িতে দই কিংবা দুধ যা-ই থাকুক না কেনো, এরসঙ্গে পছন্দের কিছু ফল মিশিয়ে স্মুদি বানিয়েও খেতে পারেন।
# ব্যায়ামের পর পেশির ক্লান্তি দূর করার জন্য প্রোটিনজাতীয় খাবার খেতে হবে। অন্তত একটি সিদ্ধ ডিম কিংবা ডিমের পোচ খাওয়া ভালো।
# যারা নিরামিষ খান, তাদের জন্য সয়াবিন খুবই উপকারী। এক কাপের মতো সয়াবিন থেকে অন্তত ২৯ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
# কিনোয়া, বেসনের চিল্লা, পালংশাক, বিটরুট কিংবা মাল্টিগ্রেন আটার রুটি খাওয়া যেতেই পারে। সঙ্গে রাখুন সব্জি, চিকেন কিংবা মাছ অথবা ডিম।
# আমরা জানি বাদামের জুড়ি নেই। আখরোট, কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।
# আবার ছাতুর শরবতও খেতে পারেন। এটি যেমন পুষ্টি দেবে, তেমন পেটও ভরা থাকবে অনেকক্ষণ। ব্যায়ামের পর ভাজাভুজি খাওয়ার আর ইচ্ছা হবে না।
শরীর চাঙ্গা রাখতে ব্যায়াম করার আধা ঘণ্টা হতে ১ ঘণ্টার মধ্যেই খাবার খেতে হবে। প্রত্যেকের শরীর পৃথক, শরীরচর্চার ধরনও পৃথক, সেইসঙ্গে শরীরভেদে পুষ্টিগুণের চাহিদা ভিন্ন। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো খাওয়া দরকার। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org