দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ছোট বাচ্চারাও অনেক সময় অ্যাসিডিটির শিকার হন। তাহলে তাকে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়ান। যে খাবারের কারণে সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে আপনার সন্তান।
শুধু বড়রাই নয় অনেক সময় বাচ্চারাও পেটের সমস্যা ভোগে। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে, তারাও অ্যাসিডিটিতে ভোগে। একটু ভারি খাবার খেলেই তখন চোঁয়া ঢেকুর ওঠে। সেইসঙ্গে গলা জ্বালা, বুক জ্বালাও হয় নিত্যসঙ্গী। সন্তানকে এমন সমস্যায় দেখে ঘাবড়ে যান বাবা-মায়েরাও। তারা তড়িঘড়ি বাচ্চাকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাইয়ে দেন অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ। তাতে আরও বিপদ বাড়ে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই ভুলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তাকে ভুলভাল কোনো ওষুধ খাওয়াবেন না। বরং এই সমস্যা থেকে তাকে একবারে সারিয়ে তুলতে নিয়মিতভাবে কয়েকটি খাবার খাওয়ান। আশা করছি যে, তাতে উপকার পাওয়া যাবে হাতেনাতে। অ্যাসিডিটির সমস্যা ছোট্ট সোনাকে আর বিরক্ত করবে না।
আদা খাওয়ান
সন্তানের যদি প্রতিদিনই অ্যাসিডিটি হয়, তাহলে তাকে নিয়মিতভাবে আদা খাওয়াতে হবে। কারণ হলো, আদায় রয়েছে জিজ্ঞেরল ও শোগাওল নামক দু’টি উপাদান। এই দুই উপাদানের অ্যান্টিইনফ্লামেটরি গুণও রয়েছে। যে কারণে আদা খেলে অ্যাসিড প্রশমিত হয়। পেট থেকে তা উপরের দিকে উঠে আসার সুযোগও পায় না। তাই সন্তানকে প্রতিদিন এক টুকরো আদা খাওয়ান। সে চিবিয়ে খেতে না চাইলে পানি দিয়ে গিলে নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। তাতে সমস্যাকে বশে আনা যাবে।
মধু খাওয়ান
আমরা সবাই জানি বাচ্চারা মিষ্টি স্বাদ ভীষণভাবে পছন্দ করে। এটিই হলো আপনার কাছে সুযোগ। তাকে ঝটপট এক চামচ মধু খাওয়ানো শুরু করে দিতে পারেন। তাতে অ্যাসিডিটিকে বশেও আনতে পারবেন। প্রকৃতপক্ষে, মধুতে উপস্থিত কিছু উপাদান পাকস্থলীর অ্যাসিডকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, পাকস্থলীর লাইনিং-এরও যত্ন নেয় এই মধু। তাই তাকে প্রতিদিন মধু খাওয়ান।
লিন প্রোটিন
দেখা যায় অনেকেই সন্তানের অ্যাসিডিটি হলে প্রোটিন খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। এই ভুলটা করেন বলে বিপদ আরও বাড়ে। তাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কাও তখন বাড়ে। তাই এই ভুল মোটেও নয়। বরং সন্তানের অ্যাসিডিটি হলে অবশ্যই তাকে চিকেনের মতো লিন প্রোটিন খাওয়াতে হবে। সেইসঙ্গে তাকে ডিমের সাদা অংশও তখন খাওয়াতে হবে। তাতে উপকার পাবেন হাতেনাতে।
সন্তানকে সবজি খাওয়ান
অ্যাসিডিটির এই সমস্যা হতে সন্তানকে মুক্তি দিতে চান? তাহলে তাকে নিয়মিতভাবে খাওয়াতে হবে সবজি। এই সময় বাজারে নানা রকম সবজি রয়েছে। সেইসব সবজিই সন্তানকে বেশি করে খাওয়াতে হবে। কারণ হলো, এই প্রাকৃতিক খাবারগুলোতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। এতে উপস্থিত ফাইবার অন্ত্রের হাল ফেরানোর কাজেও একাই একশো। তাই সন্তানের প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই সবজিকে জায়গা করে দিতে হবে।
নন সাইট্রাস ফ্রুট
বাচ্চার অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে প্রতিদিন লেবু খাওয়াবেন না। এর পরিবর্তে ডায়েটে রাখতে পারেন আপেল, পেয়ারা, কলা, আঙুরের মতো নানা ফল। এই ফলগুলোতে রয়েছে ভরপুর পরিমাণে কার্ব যা অন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। যে কারণে কমে যাবে গ্যাস-অ্যাসিডিটির মতো সমস্যাগুলো। তাই সন্তানের প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই এইসব ফলকে জায়গা করে দিন। তারপরও সমস্যা না গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org