ঢাকা টাইমস্ রিপোর্ট ॥ মহাশূন্য নিয়ে গবেষকদের গবেষণার যেনো শেষ নেই। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে নানা গবেষণা। তবে এবার বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন নতুন কিছু আর তা হলো মহাশূন্যে রয়েছে আরও তিনটি পৃথিবী!
খবরে প্রকাশ, চাঁদ কিংবা মঙ্গলে পাড়ি জমানোর জন্য ইচ্ছাটা যারা মনের কোণে লুকিয়ে রেখেছিলেন, তারা স্বপ্নটা করতে পারেন আরও বড়। চাঁদ আর মঙ্গলের চেয়েও ভালো স্থান যে অপেক্ষা করছে আপনার জন্য! হ্যাঁ, তেমনটিই বলছেন কর্নেল ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, মহাশূন্যে পৃথিবীর মতোই আরও তিনটি গ্রহ রয়েছে। পৃথিবীর মতোই বিশেষ দূরত্বে সেগুলোও তার সূর্যকে (নক্ষত্র) কেন্দ্র করে ঘুরছে। শুধু তাই নয়, সেগুলোও পৃথিবীর মতোই না বেশি ঠাণ্ডা, না বেশি গরম!
মহাশূন্যে পাঠানো নাসার কেপলার টেলিস্কোপের তোলা দেড় লাখ নক্ষত্রের ছবি পর্যবেক্ষণ করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন কর্নেল জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। জ্যোতির্বিদ্যাবিষয়ক সাময়িকী ‘অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত (সংখ্যা ৭৫০, নং-২) নিবন্ধে এ তথ্য জানা গেছে।
ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ওই তিনটি গ্রহ ‘হ্যাবিট্যাবল জোনে’ তাদের নক্ষত্র কেওআই ৪৬৩.০১, ৮১২.০৩ ও ৮৫৪.০১-কে কেন্দ্র করে আবর্তন করছে। হ্যাবিট্যাবল জোন হচ্ছে গ্রহগুলোর আবর্তনের এমন অবস্থান যা অতি উষ্ণ বা অতি শীতল নয়। সেখানে থাকতে পারে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু। থাকতে পারে ব্যবহারের উপযোগী পানি। নক্ষত্র তিনটি মহাশূন্যের সিগনাস ও লিরা অঞ্চলে অবস্থিত। অঞ্চল দুটি পৃথিবী থেকে কয়েকশ’ থেকে কয়েক হাজার আলোকবর্ষ দূরে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ্যা, যন্ত্রকৌশল ও মহাশূন্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জেমি লয়েড বলেন, বর্ণিত গ্রহ তিনটি হ্যাবিট্যাবল জোনেই তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে। দেড় লাখ নক্ষত্রের ছবি বিশ্লেষণের সময় এর ঔজ্জ্বল্য, দূরত্ব, নক্ষত্রকে আবর্তনকারী গ্রহগুলোর অবস্থান, ঔজ্জ্বল্য ও আনুষঙ্গিক বিষয়াবলী বিবেচনা করেই উল্লিখিত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তারা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, তবে আদতেই এতে জীবন ধারণের উপযোগী সবকিছু রয়েছে কিনা তা প্রমাণসাপেক্ষ বিষয়। সেখানে মানুষ বা রোবট পাঠিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই গ্রহগুলোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে। তারপরও এ পর্যবেক্ষণকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা যে অনেকদিন ধরেই বিশ্বাস করে আসছেন পৃথিবীর অনুরূপ গ্রহের অস্তিত্ব। আর সে বিশ্বাসের পীঠে কর্নেল জ্যোতির্বিদদের পর্যবেক্ষণ তো এক পা এগিয়ে যাওয়া।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের অক্টোবরে পৃথিবী থেকে মাত্র ৩৬ আলোকবর্ষ দূরে, আকারে পৃথিবীর চেয়ে সাড়ে তিনগুণের বেশি বড় এমন একটি গ্রহেরই অস্তিত্বের দাবি করেছিলেন হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের গবেষকরা। তারা গ্রহটির নামকরণ করেন এইচডি৮৫৫১২বি। তবে সেখানে বছর মাত্র ৫৮ দিনে।