দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিন স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে যে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করার কারণে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এক বিবৃতিতে সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) হামাসের কাশেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা এই কথা জানিয়েছেন। হামাসের এই ঘোষণার পরই ইসরায়েলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্টের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে পাল্টা হুমকি দেন। -খবর জেরুজালেম পোস্টের।
তিনি বলেছেন যে, যদি ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টার মধ্যে হামাসের হাতে আটক সকল জিম্মি মুক্তি না পায়, তাহলে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল করা উচিত। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হামাসকে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যদি সব ইসরায়েলি জিম্মি আগামী শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে মুক্তি না পায়, তাহলে আমি বলবো যুদ্ধবিরতিও বাতিল করা উচিত। সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাক, তারপরও ইসরায়েলের উচিত এটি অগ্রাহ্য করা। তবে এটি সম্পূর্ণ ইসরায়েলের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, এটি বাতিল করা উচিত ও সব কিছু অস্বীকারও করা উচিত। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে যখন হামাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে যে, ইসরায়েল চুক্তি ভঙ্গ করার কারণে তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি জিম্মি মুক্তি স্থগিত করেছে।
এই ঘোষণার পরই, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন ও নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার সকালে বসানো হয়েছে।
হামাসের কাশেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা বলেন, গত তিন সপ্তাহ ধরেই প্রতিরোধ বাহিনীর নেতারা ইসরায়েলের চুক্তি লঙ্ঘন অনুসরণ করেন।
তারা চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়। যার মধ্যে রয়েছে বাস্তুচ্যুত সাধারণ মানুষের উত্তর গাজায় ফেরা বিলম্ব করা, বিভিন্ন জায়গায় তাদের ওপর গোলা এবং গুলি নিক্ষেপ। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে দিতেও ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
হামাসের এই ঘোষণার পর সেনাদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশও দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। তিনি জানান যে, তারা যে কোনো কিছুর জন্যই প্রস্তুত আছেন।
আরেকটি বিবৃতিতে হামাস বলেছে যে, জিম্মিদের মুক্তির জন্য এগিয়ে যাওয়ার ‘দরজা খোলা রয়েছে’। এই পর্যন্ত মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের বিনিময়ে ইসরায়েল কয়েক’শ ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এরপূর্বে এক বক্তব্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজা ‘কিনে নিতে এবং এর মালিকানা পাওয়ার অঙ্গীকার’ করেছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org