দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লবণ-পানি পান করলে কোষ্ঠবদ্ধতার সমস্যা থেকে যেমন মুক্তি পাওয়া যায়, ঠিক তেমনি পেটব্যথা, হজমের গোলমালের মতো শারীরিক কষ্ট থেকেও পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

সকালে উঠেই ঈষদুষ্ণ এক গেলাস পানিতে লেবু না কি অল্প মধু মিশিয়ে খাওয়া শরীরের পক্ষে বেশি ভালো? মেদ ঝরাতে কী খাওয়া যায়, তা নিয়েও অনেকেই দ্বিধায় থাকেন।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে খেলেও অনেক উপকার হবে শরীরে। লবণ-পানিতে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায় সর্দিকাশি হলে। তা ছাড়াও মানসিক অবসাদ দূর করে এক গেলাস ঈষদুষ্ণ পানিতে এক চিমটে লবণ। এমনকি হজমের সমস্যা থাকলেও লবণ-পানিতে পাওয়া যাবে সমাধান। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ, সোডিয়ামের হেরফের কিংবা কিডনির সমস্যা থাকলেও হবে সাবধান! তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মোটেও এই পানীয় খাওয়া যাবে না।
পরিমিত পরিমাণে লবণ খেলে কী উপকার পাবেন?
# যদি শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা কম হয়, তাহলে হাইপোনেট্রমিয়াও হতে পারে। আবার পানির মাত্রা বেড়ে গেলেও শরীর বিগড়ে যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে দারুণ কাজ করবে এই লবণ-পানি।
# হজমের সমস্যা থাকলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে এই লবণ-পানি। ২০১০ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী জানা যায়, লবণ-পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও যেমন মুক্তি সম্ভব হয়, তেমনি পেটব্যথা, হজমের গোলমালের মতো শারীরিক কষ্ট থেকেও পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, লবণ-পানি নিয়মিত পান করলে পেট ভালো থাকে। হজমের ক্ষমতাও তখন বাড়ে।
# এক চিমটে লবণ গরম পানিতে মিশিয়ে সকালে খান। মেদ ঝরাতে এটি খুব সাহায্য করবে। গরম পানিতে লবণের মিশ্রণ শরীরের যাবতীয় টক্সিন বের করে দেয়।
# সামনেই গরমকাল। বাইরে বের হলেই গলদঘর্ম দশা হয়। ঘাম-প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের পানি বেরিয়ে যায়- ক্লান্তি আসে। লবণ-পানি শরীরে ওই পানির ঘাটতি পূরণ করবে নিমেষে।
# ত্বকের জন্যও গরম পানিতে লবণ দারুণ কাজ করে। ব্রণের সমস্যা দূর করতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যেমন জরুরি, লবণ-পানিও ভালো কাজ দেয়। নিয়মিতভাবে লবণ-পানি পানে ত্বকের ঔজ্জ্বল্যতাও বাড়ে। সোরিয়াসিসের মতো অসুখে ভালো কাজ দেয় লবণ-পানি পান।
# দাঁতের যত্নেও লবণ-পানি খেতে পারেন। মাড়িতে ব্যথা হলে লবণ-পানি দিয়ে কুলকুচি করলে স্বস্তি পাওয়া যাবে। লবণ-পানি যদি নিয়মিত পানের অভ্যাস করা যায়, তাহলে দাঁত এমনিতেও ভালো থাকবে।
# মানসিক অবসাদ কমাতেও লবণ-পানি ভালো একটি দাওয়াই। অস্থির মন শান্ত করতে ঈষদুষ্ণ পানিতে এক চিমটে লবণ মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন। কর্টিসল অর্থাৎ স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে এই লবণ-পানি। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org