দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেরই দুধ, ফল, সব্জি সবই থাকে খাবারের তালিকায়। তবুও ক্যালশিয়ামের ঘাটতি যেনো কমছে না? এমনটি কিন্তু অনেকেরই হয়ে থাকে।

এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ক্যালশিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখতে কী খাচ্ছেন শুধু সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়, কীভাবে খাচ্ছেন, তাও জরুরি। যে খাবার আপনি খাচ্ছেন, তাতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীর ঠিকমতো শোষণ করতে না পারলে ঘাটতি দেখা দিতেই পারে খনিজটির।
কেনো ক্যালশিয়াম জরুরি?
হাড় ও দাঁত মজবুত রাখার জন্য ক্যালশিয়াম খুবই জরুরি একটি বিষয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বলছে যে, ১৯- ৭০ বছরের একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের দিনে ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়ামের প্রয়োজন হয়। ৭০ বছরের পর সেই পরিমাণ বেড়ে হয়ে যায় ১৩০০ মিলিগ্রাম। শুধু হাড় কিংবা দাঁত মজবুত রাখাই নয়, পেশির কাজকর্ম, মস্তিষ্কে সঙ্কেত প্রেরণের মতো জরুরি বিষয়গুলোর জন্য এই খনিজের ভূমিকা রয়েছে। পুষ্টিবিদ গরিমা গয়াল বলেছেন যে, ‘‘ক্যালশিয়ামের অভাব হলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়, পেশিতে টান ধরার মতো সমস্যাও দেখা দেয়।’’
তাহলে ক্যালশিয়ামের অভাব পূরণে কী খাবেন?
দুধ, শাকসব্জি, ডিম, কাঠবাদামে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালশিয়াম থাকে। তবে শরীরে এই খনিজটি শোষণে ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাসে থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আবার বয়স বাড়লেই ক্যালশিয়াম শোষণে সমস্যা দেখা দেয়।
কাঠবাদাম ও আঞ্জিরের স্মুদি
১০টি কাঠবাদাম, ২টি ভেজানো আঞ্জির, এক কাপ কাঠবাদামের দুধ, এক টেবিল চামচ চিয়া বীজ, আধা চামচ দারচিনি গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ মধু ভালো করে ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিন। শুধু ক্যালশিয়ামই নয়, এই স্মুদিতে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস। কাঠবাদামে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়াম শোষণে যা অত্যন্ত জরুরি।
পালং-কলার স্মুদি
এক কাপ পালংশাক, একটি পাকা কলা, এক কাপ ইয়োগার্ট, এক টেবিল চামচ তিসির বীজ মিলিয়ে স্মুদি বানিয়ে নিতে পারেন। ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণের সমস্ত উপকরণই এতে পাওয়া যাবে।
রাগি ও খেজুরের স্মুদি
দুই টেবিল চামচ রাগির আটা, এক কাপ দুধ, ৩-৪টি বীজ ছাড়ানো খেজুর একসঙ্গে মিক্সিতে ঘুরিয়ে নিতে হবে। সেইসঙ্গে যোগ করুন সামান্য এলাচ। খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, আয়রণ। প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম পাওয়া যায় রাগিতে- তাই এটি বয়ষ্কদের জন্য উপকারী। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org