দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই কথায় কথায় বলে থাকেন যে, দিনে একটা করে আপেল খেলেই ডাক্তারের থেকে দূরে থাকবেন। কথাটা যে খুব একটা ভুল নয় সেটি অনেকেই মানেন। এটি ঠিক যে, এই ফলটি পুষ্টিতে ভরপুর। তবে সত্যিই কী একটা আপেল খেলে কোনও রোগই আপনার ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না?

এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ অনুশ্রী মিত্র বলেছেন, ‘আপেল অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। তবে আপেল খেলেই আর ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না, এমনটি মোটেও ঠিক নয়। এই আপেলকে হেলদি ডায়েটের অংশ করে তুলতে পারেন। তবে শুধু আপেল খেয়েই সুস্থ থাকা যায় না।’ অর্থাৎ, আপনার ডায়েটে অন্যান্য ফল ওএবং শাকসব্জি রাখাও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পুষ্টিবিদ অনুশ্রীর জানিয়েছেন, সারা বছরই আপেল খাওয়ার চেয়ে, যে মৌসুমে যে ফল পাওয়া যায়, সেগুলোও বেশি করে খাওয়া উচিত। কারণ হলো মৌসুমি ফল সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর।
সারা বছরই বাজারে আপেল পাওয়া যায়। সহজলভ্য একটি ফল ও স্বাস্থ্যের জন্যও বেশ উপকারী। আপেলের মধ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে। এমনকি, গ্লাইসেমিক সূচকও থাকে কম। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরাও আপেল খেতে পারেন অনায়াসে। কোলেস্টেরল কমাতে, হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের হাত হতে মুক্তি দিতে আপেলের জুড়ি নেই। এমনকি কমিয়ে দেয় ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।
তবে চাইলেই যে কেও আপেল খেতে পারেন না। পুষ্টিবিদ অনুশ্রীর বক্তব্য হলো, ‘যাদের গ্যাস্ট্রাইটিস, ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম, অ্যাসিডিটি, ব্লোটিংয়ের মতো হজমজনিত সমস্যা বিদ্যমান, তাদের আপেল খাওয়া মোটেও উচিত নয়।’ শুধু তাই নয়, মিল হিসেবেও আপেল খাওয়া উচিত নয়। ভারি খাবার খাওয়ার পরিবর্তে শুধু আপেল খেয়ে দিন কাটালে সমস্যায় পড়তে হবে।
ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চের মধ্যে যে সময়, সেটি ফল খাওয়ার জন্য আদর্শ সময়। তখন ইচ্ছে করলে আপেল খেতে পারেন। আবার ব্রেকফাস্টে অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে আপেলও রাখতে পারেন। পুষ্টিবিদ অনুশ্রীর বক্তব্য হলো, ‘আপেলের ডেজার্ট কিংবা পিনাট বাটার দিয়ে আপেল, এই ধরনের খাবার অবশ্য না খাওয়াই ভালো। আপেল দিয়ে স্মুদি, ফ্রুট স্যালাড ইত্যাদি বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।’ পুষ্টিবিদের মতে, খোসা সমেত আপেল খাওয়া দরকার। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org