দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি নামে ব্যাকটেরিয়াটির কিছু উপকারিতাও রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, এই ব্যাকটেরিয়ার জন্য লোকে গ্যাসট্রাইটিস কিংবা পেপটিক আলসারে ভোগেন।

গ্যাসট্রাইটিসে ভোগা অর্ধেক রোগীর পাকস্থলীতে জীবাণুটি পাওয়া যায়। এবার জানা গেছে, এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে হাড়ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।
একটি চীনা গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি শরীরে ভিটামিন ডি-থ্রি তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। যে কারণে ক্যালসিয়াম শোষণ বিঘ্নিতও হয়ে পড়ে। এরজন্যই পলকা হয়ে ওঠে হাড়।
গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয় ‘বিএমসি-গ্যাসট্রোএন্টেরোলজি’ নামে একটি জার্নালে। সিচুয়ানের জেনারেল হসপিটাল অফ দ্য ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কম্যান্ডের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের ৩ বছরের ওই গবেষণায় উঠে এসেছে যে, যাদের হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণ রয়েছে, তাদের রক্তে ভিটামিন ডি-এর অভাব প্রকট থাকে।
কীভাবে জানা গেলো তথ্যটি?
গবেষকরা জানিয়েছেন যে, ওই জীবাণুটির সংক্রমণ রয়েছে, এমন ৪১৫ জন ও সংক্রমণ নেই এমন ২৫৭ জনের উপর স্টাডিটি করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ১৮ হতে ৭৮ বছর।
গবেষণায় জানা গেছে প্রত্যেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা, জীবিকা, বাসস্থান, বার্ষিক আয়, ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস, খাদ্যাভাস, পানীয় জলের উৎস এবং খাবার খাওয়ার স্বাস্থ্যবিধি ইত্যাদি সম্পর্কে। তারপর তাদের প্রত্যেকের সিরাম ভিটামিন ডি লেভেল জানার জন্যও রক্তপরীক্ষা হয়েছে।
তাতেই দেখা গিয়েছে যে, যাদের হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণ রয়েছে, তাদের অধিকাংশেই সিরাম ভিটামিন ডি লেভেল ন্যূনতম ২০ ন্যানোগ্রাম/মিলিলিটার মাত্রারও কম।
গবেষণালব্ধ এই ফলাফলকে কিছুটা উল্টোভাবে দেখতে চান রিউম্যাটোলজি বিশেষজ্ঞ শৌনক ঘোষ। তিনি আরও বলেন, ‘হাড়ের মজবুতির সঙ্গে ভিটামিন ডি’র সম্পর্ক বিজ্ঞানে সুবিদিত। তবে আরও একটি বিষয় হলো ইমিউনিটি।
ভিটামিন ডি-এর সঙ্গে ইমিউনিটির সমানুপাতিক সম্পর্কও রয়েছে। যাদের এই ভিটামিন কম, তাদের শরীরে ইমিউনিটিও কমে যায়। যে কারণে সংক্রমণের আশঙ্কাও বেশি থাকে। সেই রাস্তা দিয়ে তাদের পেটে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণও সেঁধিয়ে যায় খুব সহজেই।’
তার মতে, সে জন্যই যাদের পাকস্থলীতে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণ রয়েছে, তাদেরই ভিটামিন ডি-থ্রি কম দেখা গেছে ওই স্টাডিতে।
এই বিষয়ে একমত হয়েছেন আরেক রিউম্যাটোলজি বিশেষজ্ঞ অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়। তার ভাষায়, ‘ভিটামিন ডি কম থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়ে কম ইমিউনিটির কারণে। সেই সংক্রমণের মধ্যে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণ পড়ে।
সেই জন্য যাদের এই সংক্রমণ রয়েছে, তাদের ভিটামিন ডি কম দেখা গেছে। আগামী দিনে তাই এই নিয়েও গবেষণা হওয়া উচিত, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট সত্যিই বাস্তবে হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণের আশঙ্কা কমায় কি-না, সেটিও আসলে পরখ করে দেখা।’
তবে চীনা ওই স্টাডিতে অংশগ্রহণকারীদের হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণ ছাড়া অন্য কোনও সংক্রমণ ছিল কি-না, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়নি। বিশেষত: যাদের ভিটামিন ডি কম রয়েছে, তাদের অন্য কী কী সংক্রমণ ছিল, নাকি শুধুই হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরির সংক্রমণই ছিল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।
তাই ‘সাবধানের মার নেই’ মনে করে দিয়ে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের দেশে গ্যাসট্রাইটিস এবং পেপটিক আলসার খুবই কমন একটি বিষয়।
আবার ভিটামিন ডি’র অভাবও বেশ কমন। তাই গ্যাসট্রাইটিস এবং পেপটিক আলসারের সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের যে ভিটামিন ডি-এর মাত্রাও পরখ করে নেওয়া উচিত, এই গবেষণা সেই দিকেই ইঙ্গিত করেছে। এতে গোড়াতেই রোগ ধরা পড়ার সম্ভাবনাও বাড়ে নিশ্চিতভাবেই।’ তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org