দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আসলে পৃথিবীর ওপর কী আছে, তা কী মানুষ সহজেই দেখতে পারে? তবে ভূগর্ভের গভীরে কেন্দ্র পর্যন্ত যে বিশাল অজানা এক জগৎ লুকিয়ে রয়েছে, তার সামান্য অংশই বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। সম্প্রতি পাওয়া এক নতুন এক তথ্য নিয়ে সাড়া ফেলেছে বিশ্বময়।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, পৃথিবীর উপরিভাগ মূলত যে অভিমুখে ঘুরছে, কেন্দ্র ঘুরছে ঠিক তার ঠিক বিপরীত অভিমুখে। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিন পূর্বেই পৃথিবীর কেন্দ্র ঘোরা থামিয়েও দিয়েছিল। এরপর থেকেই এটি ঘুরছে মূলত উলটো মুখে। এর ফলে কী হতে পারে? ধ্বংস হয়ে যেতে পারে কী প্রাণীকুল? প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলের।
সম্প্রতি নেচার জিওসায়েন্স-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, পৃথিবীর কেন্দ্র একদিকে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎই থেমে যায় ও অল্প সময়ের মধ্যেই বিপরীত দিকে ঘুরতে শুরু করে। এই ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে। গবেষকদের তথ্য মতে, বর্তমানে পৃথিবীর কেন্দ্র ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরছে- যা নিয়ে উদ্বেগও তৈরি হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ২০০৯ সালে পৃথিবীর কেন্দ্র হঠাৎই থেমে গিয়েছিল। এরপর থেকেই এটি উল্টো অভিমুখে ঘুরতে থাকে। সংবাদ সংস্থার খবরে আরও জানা যায় যে, চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এই তথ্য উন্মোচন করেন। তারা মনে করেন, গড়ে প্রতি ৩৫ বছর অন্তর পৃথিবীর কেন্দ্র নিজের ঘূর্ণনের দিকে পরিবর্তন করতে পারে, যদিও কখনও কখনও এই ব্যবধান ৭০ বছর পর্যন্তও হতে পারে।
প্রথমবার ১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কেন্দ্রের ঘূর্ণন নিয়েও ধারণা পান। তাদের অনুমান যে, আবারও ২০৪০ সালের মাঝামাঝি সময় পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলের ঘূর্ণন দিক পরিবর্তিতও হতে পারে।
পিকিং ইউনিভার্সিটির গবেষকরা ১৯৯৫ হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত হওয়া সব ভূমিকম্পের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন যে, ঘূর্ণনের এই পরিবর্তন সম্ভবত দিনের দৈর্ঘ্যরে পরিবর্তনের সঙ্গেও জড়িত। পৃথিবী নিজের অক্ষে যেভাবে সারাক্ষণই ঘুরে চলেছে, তার ওপরও প্রভাব ফেলতেও পারে কেন্দ্রের ঘূর্ণন। তবে ঘটনাটি বড় কোনো বিপদও ডেকে আনতে পারে? এই ঘটনার কারণে জীবকুলের অস্তিত্ব কী বিপন্ন হতে পারে? গবেষকরা অবশ্য জানিয়েছেন যে, তেমন কোনো আশঙ্কা নেই। পৃথিবীর উপরিভাগে এই ঘূর্ণনের প্রভাব টের পাওয়া যাবে না। যে কারণে এই মুহূর্তে জীবকুলের কোনো রকম ভয় নেই বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা। তবে বিষয়টির ওপর নজর রাখা হবে বলে তারা জানিয়েছেন। তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org