দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভুট্টা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর শস্য, যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি শুধু খাবার হিসেবেই নয়, বরং স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ভুট্টার মধ্যে রয়েছে নানা রকম ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে নানা রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ভুট্টায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরের শক্তির অন্যতম উৎস। নিয়মিত ভুট্টা খেলে দেহে শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং ক্লান্তি দূর হয়। এতে ফাইবার বা আঁশও রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ভুট্টায় রয়েছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, ভিটামিন এ, আয়রণ, ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তস্বল্পতা রোধে সহায়ক। বিশেষ করে ভিটামিন এ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে নিয়মিত ভুট্টা খেলে চোখের দৃষ্টি শক্তিশালী থাকে এবং বয়সজনিত দৃষ্টিক্ষীণতা কমে।
ভুট্টায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়, ফলে হার্ট সুস্থ থাকে। সেইসঙ্গে ভুট্টায় ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। যারা ডায়েট মেনে চলেন, তাদের জন্য ভুট্টা একটি ভালো বিকল্প খাবার হতে পারে।
এছাড়া ভুট্টায় থাকা ফোলেট গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের গঠন উন্নত করে। শিশু এবং বৃদ্ধ উভয়ের জন্যই ভুট্টা একটি পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে কাজ করে।
ভুট্টা সিদ্ধ, ভাজা, ভুট্টার খই বা কর্নফ্লেক্স- যেভাবেই খাওয়া হোক, এটি শরীরের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত তেল বা মসলা দিয়ে রান্না করলে এর গুণাগুণ কিছুটা নষ্ট হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে ভুট্টা খাওয়াই শ্রেয়।
তাই বলা যায়, ভুট্টা একটি প্রাকৃতিক শক্তির উৎস এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর শস্য, যা দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীর ও মন উভয়ই থাকবে সুস্থ ও সতেজ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org