দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতালির তুরিন শহরে একটি বিধান প্রচলিত আছে- শহরে কুকুর পোষা হলে প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক বার হাঁটাতে হবে; তা না হলে জরিমানা গুণতে হতে পারে।

কারণ এবং প্রেক্ষাপট
পশু কল্যাণ আইন এবং নিয়ম-নীতি এমন যে, “পোষা প্রাণী জীবই, মালিকের সম্পদ নয়”- এমন ধারণা থেকে জন্ম নেয় এই বিধান।
২০০৫ এর দিকে স্থানীয় পৌর-নিষিদ্ধে এই বিধানটি আলোচনায় উঠে আসে, যাতে কুকুরের সামাজিক আচরণ, স্বাস্থ্য ও সুষম চলাচল নিশ্চিত হয়।
বিস্ময়ের দৃষ্টিকোণ
সাধারণ মানুষ হয়তো ভাবেন- “কুকুর আমার, আমি কখন হাঁটাবো সেটি আমিই ঠিক করবো?”- কিন্তু আইন বলছে, “প্রতিদিন হাঁটা বাধ্যতামূলক”।
এমন নিয়ম যা সাধারণ জীবনে ভাবাই হয়নি, সেখানে আইন-বাঁধাই করা হয়েছে। এই আইনটি আজব মনে হয় কারণ হলো– বিশ্বের অনেক দেশে কুকুর হাঁটানো সাধারণ দায়িত্ব হলেও আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসেবে এতো স্বচ্ছ ধারায় নেই।
প্রভাব এবং প্রতিফলন
এতে পশুপ্রেমীদের সচেতনতা বাড়ে- তারা বুঝতে পারেন পোষা প্রাণীরও আইনগত দৃষ্টিকোণ রয়েছে।
শহুরে এলাকায় পশু চলাচল-নিয়ন্ত্রণ, জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এটি ভালো উদাহরণও হতে পারে।
এমন নিয়ম দেখায়- আইন শুধু মানুষ-মানুষের মধ্যে নয়, মানুষ-প্রাণীর মধ্যেকার সম্পর্কও গঠন করে।
সীমাবদ্ধতা এবং ভাবনার বিষয়
কতটা কার্যকরভাবে এই আইন প্রয়োগ হয়, তা নগরভিত্তিক পৃথকও হতে পারে। ‘প্রতিদিন ঘোরানো’র মান কি, কত বার- এইসব স্পষ্ট নয়। আইন-প্রয়োগের হালকা কিংবা কঠোরতা পরিবর্তনও হয়।
তবে শেষ কথা হলো- ভবিষ্যতে শহর এবং পশু আইন এক-অধিকালে আরও বিশ্লেষণ এবং সংশোধনের দাবিও রাখে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org