দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইটি) খাতে কিছু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিচে সাম্প্রতিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ খবর তুলে ধরা হলো।

টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট খাতে উন্নতি
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ করেছে।
এটুআই প্রকল্পের আওতায়, সরকারি সেবার একক পোর্টাল ‘মাইগভে’ গত ১০ মাসে ১০ লাখ ই-অ্যাপোস্টিল সেবা প্রদান করেছে, যা ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থার সফলতা নির্দেশ করে।
প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা
ক্যাস্পারস্কি প্রতিষ্ঠানের মতে, বাংলাদেশকে শক্তিশালী আর্থিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ফাইন্যান্স খাতের সুরক্ষায়।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের হ্যাকার গ্রুপ “রহস্যময় হাতি’ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ চালাচ্ছে, যা সাইবার নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি খাতে অগ্রগতি
ইডটকো বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পরবর্তী প্রজন্মের ফাইবার রিইনফোর্সড পলিমার (এফআরপি) টাওয়ার স্থাপন করেছে, যা পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ডিজিটাল অবকাঠামোর দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ফুডপ্যান্ডা এক হাজার রাইডারকে বিনামূল্যে দুর্ঘটনা বিমা সুরক্ষা প্রদান করছে, যা ডিজিটাল কর্মীদের সুরক্ষায় একটি ইতিবাচক উদাহরণ।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশের আইসিটি খাতে শিক্ষার মান ও কর্মসংস্থানের অভাব বড় অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। তবে, ইন্টারনেটের মূল্য কম হওয়া ও ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে আইসিটি খাতের উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের আইটি খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও, সাইবার নিরাপত্তা, দক্ষ মানবসম্পদ এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে আরও মনোযোগ প্রয়োজন। এই খাতে সরকারের নীতি সহায়তা এবং উদ্যোক্তা সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org