দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবারও হরতালের কর্মসূচি আসছে। সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন মন্ত্রির সফর ও সপ্তাহের শেষে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কারণে অনেকেই ধরেই নিয়েছিলেন এ সপ্তাহ হরতাল থাকছে না। কিন্তু মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল দেওয়া হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
গত এক বছর ধরেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকেই যাচ্ছে। বর্তমান আগামী দু’মাসও সেভাবেই চলবে প্রায় নিশ্চিত করে বলা যায়। কিন্তু হরতাল-ধর্মঘটের কারণে স্কুল-কলেজের পরীক্ষা পিছিয়ে এক ‘ভজঘট’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আগে বলতেন কবে কবে হরতাল থাকে তা জানা দরকার। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে যা মনে হচ্ছে তাতে কবে হরতাল না থাকে সেই ক্যালেন্ডারই এখন দরকার। আর সেই মোতাবেক পরীক্ষার রুটিং ও অন্যান্য কাজ-কর্মের সূচি নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি আবারও হরতাল দেবে। তবে আগামী সপ্তাহের হরতালের দিনক্ষণ ঠিক করা নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় পড়েছে তারা। এর কারণ হিসেবে দলীয় সূত্রগুলো বলেছে, সপ্তাহের শুরুতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল ঢাকায় আসছেন। রবিবার তিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে ও সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ওই দিনই ঢাকা ত্যাগ করবেন। আর সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস। কর্মসূচি দেওয়ার ক্ষেত্রে এ দুটি বিষয়কে বিবেচনা করতে হচ্ছে। বিএনপির নীতি নির্ধারকরা গত সপ্তাহের হরতাল শেষে এ সপ্তাহে ৯৬ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন।
বিএনপির একাধিক সূত্রের উদ্বৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, আগামী মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত ৭ নভেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহেই ছুটির দিন ও দু-একটি কার্যদিবস বাদে হরতাল কর্মসূচি চলতে থাকবে। তফসিল ঘোষণার পর অবরোধসহ আরও কঠোর কর্মসূচির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
সব মিলিয়ে যা মনে হচ্ছে তাতে দেখা যায়, অনেক হিসাব-নিকাশ করেই পা ফেলছে বিএনপি। সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের উদ্যোগ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। মার্কিন মন্ত্রির আগমনকে সামনে রেখে তাই বিএনপি হরতাল কর্মসূচি কিছুটা হলেও শিথিল করতে আগ্রহী। অপর দিকে বিএনপির ৫ নেতার ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর এবং খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিদেশে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণাকে সরকারের এক কৌশল হিসেবে দেখছে বিরোধী দলের নেতারাও। আর তাই তাদের কর্মসূচি থেকে শুরু করে প্রতিটি পদক্ষেপই হিসাব-নিকাশ করেই নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে শেষতক কি হবে তা সময়ই বলে দেবে।