দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দিনকে দিন মানুষের ইনসোমনিয়া বা নিদ্রাহীনতা আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। এরফলে মানুষের স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ছে। তাইওয়ানের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তরুণদের ইনসোমনিয়া আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধদের চেয়ে বেশি।
চার বছরের গবেষণায় গবেষকরা দেখেছেন যে, ইনসোমনিয়া বা নিদ্রাহীনতা থেকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় ৫৪ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়াও গবেষণায় আরো দেখা গেছে, ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগের বয়স ১৮ থেকে ৩৪ বছর। এদের মধ্যে কেও কেও বৃদ্ধদের তুলনায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ৮ গুণ বেশি।
“আমরা নজর দিয়েছিলাম উচ্চ রক্তচাপের দিকে যা কোলেস্টরলের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ফ্যাক্টর কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কোলেস্টরলের চেয়ে স্ট্রোকের পেছনে বেশি ভূমিকা রাখছে নিদ্রাহীনতা” বিষয়টি তুলে ধরেন ডাঃ ডিমিট্রিস লোপাস যিনি আন্তর্জাতিক সেরেব্রোভাস্কুলার সেন্টারে পরিচালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন এবং এই গবেষণার অন্যতম গবেষক। গবেষণাটি করা হয় র্যান্ডম নির্বাচন পদ্ধতিতে, এখানে তাইওয়ানের ৮৫০০০ মানুষকে বেছে নেওয়া হয় যেখানে ২১০০০ লোক ইনসোমনিয়ায় ভোগে আর ৬৪০০০ লোক ইনসোমনিয়ায় ভোগে না। তাদের কেওই আগে স্লিপ অ্যাপনিয়া কিংবা স্ট্রোকের ডায়াগনোসিস করেনি। গবেষণাটি স্ট্রোক ম্যাগাজিনের মে সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়।
চার বছরের নজরদারির পর দেখা যায়, ৫৮৩ জন ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত আর ৯৬২ জন ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত নয় এমন ব্যক্তি স্ট্রোকের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়। অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করার পর গবেষকরা দেখতে পান যে, ইনসোমেনিয়ায় ভোগা ব্যক্তিদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যে সকল লোক অবিরাম ইনসোমনিয়ায় ভুগে থাকে তারা সবিরাম ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির স্ট্রোকের প্রবণতা ছাড়াও আরো অনেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। তার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টরল ইত্যাদি।
গবেষণা দেখাচ্ছে, ইনসোমনিয়া শুধুমাত্র একটি রোগের উপসর্গ নয় বরং এটি অনেকগুলো রোগের উপসর্গ। তাছাড়াও ইনসোমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মানসিক অবনতি ঘটে পরিণামে এটি আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। ইনসোমনিয়া একটি দূষিত চক্র যা একজন ব্যক্তির মানসিক এবং শারীরিক দুদিকেই ক্ষতি করে। কেও যদি দিনের পর দিন ভালোভাবে ঘুমোতে না পারে তবে ব্যক্তির শরীরের ব্লাড গ্লুকোজ লেভেল নিচের দিকে নেমে যায় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায় পরবর্তীতে এটিই ইনসোমনিয়ায় রূপ ধারণ করে।
তথ্যসূত্রঃ নিউজম্যাক্সহেলথ