দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ নির্ঘুম রাত কাটেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। রাতে ঘুম আসেনা, ঘুমাতে গেলে এপাশ ওপাশ করে বিরক্তিকর সময় কাটান। অনেকে তো নিদ্রাহীনতা থেকে রেহাই পেতে তীব্র ঘুমের ঔষধে আসক্তও হয়ে পড়েন। সারা রাত ঘুম না হওয়ার ফলে দিনেও থেকে যায় অস্বস্তির রেশ। এ বিরক্তিকর নিদ্রাহীনতা থেকে রেহাই পেতে ঠিক ঠাক ৯টি খাবার খেলেই যথেষ্ট। জানতে হলে বিস্তারিত পড়ুন।
বর্তমান যান্ত্রিক জীবন-যাত্রায় নিদ্রাহীনতা একটি ভয়ানক ব্যাধি হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রতি রাতে ৫ ঘণ্টার কম ঘুমানোটাকে স্বাস্থ্যগত সমস্যার ইঙ্গিতবাহী মনে করা হয়। এছাড়া আপনি যদি রাতে ঠিক ঠাক ঘুমাতে না পারেন তবে পরদিন দিনে কাজে গিয়ে সঠিক মনোনিবেশ করতে পারবেন না। শরীর নিস্তেজ ও পরিশ্রান্ত দেখাবে যা আপনার কর্ম ক্ষেত্রে সুনাম নষ্ট করতে যথেষ্ট। সম্প্রতি ভারতীয় অনলাইন ভিত্তিক লাইফ স্টাইল ম্যাগাজিন ম্যানস এক্সপি ডট কম নিদ্রাহীনতা কাটাতে সক্ষম ৯টি খাবারের তালিকা প্রকাশ করেছে। চলুন জেনে নেয়া যাক কি কি খেলে নিদ্রাহীনতা নামক জটিল সমস্যা থেকে আরোগ্য পাওয়া যাবে।
১। ভুট্টা, গম, জব ইত্যাদি খাদ্যশস্যঃ ভুট্টা, গম, জব ইত্যাদি খাদ্যশস্য থেকে তৈরিকৃত আটা বা রুটি খাবেন। ভুট্টা, গম, জব ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরে সেরোটোনিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। সেরোটোনিন এমন একটি উপাদান যা আপনার শরীরের নার্ভের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখে। এর ফলে আপনার সম্পূর্ণ শরীর রিলাক্স অবস্থায় থাকে। ফলে আপনি যখন ঘুমাতে যাবেন এবং বাতি নিভাবেন আপনার চোখ জুড়ে প্রশান্তির ঘুম নেমে আসতে বাধ্য।
২। গরু, ভেড়া ও ছাগলের মাংসঃ আপনার যদি নিদ্রাহীন রাত কাটে তবে আপনাকে আইরন ভরপুর খাবার খেতে হবে। গরু, ভেরা ও ছাগলের মাংসে প্রচুর পরিমাণ আইরন ও প্রোটিন রয়েছে। এসব মাংস খেতে হলে আপনি রাতে না খেয়ে দুপুরে খাবার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার নিদ্রাহীনতা কমবে। তবে আপনি যদি এসব খাবার রাতে খান তবে এর প্রোটিন আপনার ঘুম কেড়ে নিবে।
৩। মুরগীঃ Tryptophan নামে এক ধরণের এমিনো এসিড যা সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখে তা পাওয়া যায় মুরগীর মাংসে। মুরগীর মাংস নিদ্রাহীনতার জন্য আদর্শ খাবার। আপনি আপনার ধুপুরের খাবারে মুরগী রাখতে পারেন।
৪। ক্যামোমিল চাঃ যদিও ক্যামোমিল চা যে নিদ্রাহীনতা কমায় এমন কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই তারপরও আপনি এক কাপ ক্যামোমিল চা পান করতে পারেন। ক্যামোমিল চা আপনার ঘুম কেড়ে না নিলেও আপনাকে দিবে একধরনের প্রশান্তি।
৫। মধুঃ মধু আরেকটি খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণ tryptophan রয়েছে। আগেই বলেছি tryptophan সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখে। আপনি এক কাপ গরম দুধের সাথে কিছু পরিমাণ মধু মিশিয়ে রাতে ঘুমোতে যাবার আগে পান করতে পারেন। এটি আপনার ঘুমে সহায়তা করবে। এ ছাড়া মধু একটি স্বাস্থ্য সম্মত খাবার।
৬। ডাল জাতীয় শস্যদানাঃ ডাল যেমন সয়াবিন অথবা মটরে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম আপনার পেশী ও নার্ভ কে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে। এতে আপনার শরীর স্বাভাবিক ও প্রশান্তিতে থাকবে যা দিন শেষে আপনার স্বাভাবিক ঘুম হতে সাহায্য করবে।
৭। শাঁখ সবজীঃ পালং শাঁখ, পুঁই শাঁখ, ধনে পাতা, এবং বাঁধাকপি এসব শাঁখ সবজীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণম্যাগনেসিয়াম। আপনি যদি এসব সবজী আপনার রাতের খাবারে খেয়ে থাকেন তবে এখন থেকে এসব সবজী আপনি দুপুরের খাবারে অন্তর্ভুক্তি করুণ। একটি বিশেষ বিষয় মনে রাখবেন ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে আপনার কোষ্ঠ কাঠিন্য হতে পারে।
৮। দুধঃ আপনি ঘুমোতে যাবার আগে এক গ্লাস দুধ পান করতে পারেন। দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরি খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম আপনার মস্তিষ্কে সেরোটোনিন বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে ফলে আপনি রাতে নিরবে আরাম দায়ক ঘুম পাবেন।
৯। কলাঃ কলা হচ্ছে ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ ফল। ভিটামিন বি-৬ আপনার শরীরে সেরোটোনিন বৃদ্ধি করে। আপনি রাতে ঘুমোতে যাবার আগে এক গ্লাস কলার জুস দিয়ে বানানো আইস ক্রিম খেয়ে নিতে পারেন এতে আপনার নিরব ও আরামদায়ক ঘুম হবে।
মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে যেমন খাবার খেতে হয়, তেমনি ঘুমাতেও হয়। মানসিক উত্তেজনা, উৎকন্ঠা, দুঃশ্চিন্তা থেকে অনিদ্রা দেখা দিতে পারে। অতএব সব সময় চেষ্টা করবেন এসব থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখতে।