দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফুলগাজীর চেয়ারম্যানকে নির্মমভাবে গাড়ির মধ্যে পুড়িয়ে হত্যার পিছনে রয়েছে ঠিকাদারি ভাগাভাগি। আর এই পরিকল্পিত কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল অন্তত ৪০ যুবক। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এই খবর দিয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, ‘ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে সকাল থেকেই প্রায় ৪০ জন অজ্ঞাত যুবক ঘোরাফেরা করতে থাকে। তাদের হাতে কোনো কিছু দেখা যায়নি। তবে শরীরটা উঁচু বা মোটা দেখা যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, জামার নিচে বা প্যান্টের পকেটে কিছু লোকানো আছে।’ এই বর্ণনা দিয়েছেন ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরের একটি চায়ের দোকানদার। তিনি এই লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন। খবর বাংলাদেশ নিউজ২৪।
তিনি পরিচয় গোপন রেখে বলেন, ‘সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের পর আসে একরামুল হকের গাড়ি। গাড়িটি ওকানে আসার পর সাথে সাথে পিঁপড়ার মতো ছুটে আসে দুর্বৃত্ত ওইসব যুবকরা। এক নিমেষে জড়ো হয় একরামের গাড়ির সামনে। রিকশাভ্যান এবং পাওয়ার টিলার দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। এরপর প্রথমে গাড়ি ভাঙচুর ও পরে গাড়িতে থাকা একরামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে তারা।
এমন এক অবস্থায় ‘ভয়ে গাড়িতে থাকা অন্য ৩ জন নেমে যান। একরাম বের হতে চাইলেই তাকে গুলি করা হয় কয়েক রাউন্ড। এরপরই দূরে গিয়ে বেশ কয়েকটি পেট্রোলবোমা ছোড়ে তারা। পেট্রোল বোমার আঘাতে একরামসহ গাড়ি, পাওয়ার টিলার, রিকশাভ্যান সব পুড়ে যায়। তখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন। শুধু চিৎকারের শব্দ এসেছে। কেও এগিয়ে আসেনি তাকে বাঁচাতে। কিলাররা গলির ভেতর দিয়ে চলে যায়। তবে কাওকে চেনা যায়নি।’
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরামকে ঠিক এভাবেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ফেনীর একাডেমি রোডস্থ বিলাসী সিনেমা হলের সামনেই ঘটে এ বিভৎস ঘটনা। স্থানীয় পত্রিকার এক সাংবাদিক, একরামের দেহরক্ষী এবং গাড়িচালক মামুনসহ ৩ জন অগ্নিদগ্ধ হন। তারা এখন হাসপাতালে। অপর দিকে ঘটনাস্থলেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে একরামের দেহ।
ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ঠিকাদারি ভাগবাটোয়ারা?
অনেকেই মনে করেন, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ঠিকাদারি ভাগবাটোয়ারা। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরাম (৪৭) জড়িত ছিলেন ঠিকাদারী ব্যবসার সঙ্গে। তিনি একটি পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হতো ‘ফেনী প্রতিদিন’ নামের একটি দৈনিক পত্রিকা। তিনি ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। একটি সূত্র বলেছে, একরামুলের সঙ্গে ঠিকাদারির কাজ নিয়েও সমস্যা থাকতে পারে। হয়তো ঠিকাদারি ভাগবাটোয়ারার কারণে তাকে এভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে।