দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নারায়ণগঞ্জ সেভেন মার্ডার ঘটনায় গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে।
র্যাব-১১ এর সদস্যদের বিরুদ্ধে ৭ ব্যক্তিকে অপহরণ, হত্যা এবং লাশ শীতলক্ষ্যায় ডুবিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি পৃথক দুটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনার পর অন্যান্য তদন্ত সংস্থার পাশাপাশি পৃথক গোয়েন্দা সংস্থাও তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। ঘটনার পর গণমাধ্যমে র্যাবকে জড়িয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য প্রকাশ হতে থাকে। ওইসব প্রতিবেদনের সত্যতাও পেয়েছে পুলিশের স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ (এসবি)। এ সব বিষয় উল্লেখ করে বেশ কিছু তথ্য উদঘাটন করে সংস্থাটি পৃথক দুটি বিশেষ প্রতিবেদনও তৈরি করেছে।
ওই প্রতিবেদনে হত্যায় র্যাবের জড়িত থাকার বিষয়ে বলা হয়, ‘র্যাব-১১ তে কর্মরত মেজর (অব.) আরিফের সঙ্গে নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মেজর (অব.) আরিফ ইয়াবাসহ বিভিন্ন নেশায় আসক্ত ও নূর হোসেন তাকে এসব নেশা সামগ্রীর যোগান দিতো। অপরদিকে র্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ বর্তমান সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রীর জামাতা হওয়ায় তিনি নিজেকে একজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে সব সময় প্রকাশ করতেন। অপর আরেক কর্মকর্তা লে. কমান্ডার (অব.) এস এম রানা খুবই উগ্র এবং হিংস্র প্রকৃতির বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘটনায় নিহতদের হত্যার পর লাশ ডুবিয়ে রাখার জন্য যে ইট ব্যবহার করা হয়েছে, সেই ইটে গইই মার্কিং রয়েছে। সিদ্বিরগঞ্জ র্যাব-১১ এর কার্যালয়ের পাশে নির্মাণকাজে ব্যবহারের জন্য সেখানে গইই মার্কিং করা প্রচুর ইটের স্টক রয়েছে। এ ছাড়াও মৃতদেহ যে দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়েছে এবং যে সকল বস্তায় ইট ভরা হয়েছে, সে ইট দড়ি এবং বস্তা র্যাবের নিজস্ব সরবরাহের বলে উল্লেখ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
তবে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে রাজনৈতিক কারণের বিষদ বিবরণ রয়েছে। তাতে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুলের সঙ্গে নূর হোসেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ঠিকাদারী কাজ থেকে শুরু করে আর্থিক বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাপক বিদ্বেষ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
নারায়ণগঞ্জের ৭ খুনের ঘটনার তদন্ত সম্পর্কে পুলিশ সুপার (এসপি) ড. খন্দকার মুহিদ উদ্দিন এর উদ্বৃতি দিয়ে বাংলাদেশ নিউজ২৪ আরও বলেছে, ‘তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে, যা তদন্ত কাজ এগিয়ে নেবে। খুব শীঘ্রই আদালতে একটি সঠিক এবং সুন্দর তথ্য সম্বলিত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। যা নারায়ণগঞ্জবাসীসহ গণমাধ্যমকর্মীরাও পছন্দ করবেন।’