দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মায়ের ভালবাসা সবসময়ই হয় অকৃত্রিম ভালবাসা। হৃদয়ের সব ভালবাসা থাকে সন্তানের প্রতি। সেই প্রমাণ দিলেন আরেক মা। ঢাকা মেডিকেলের বেড থেকে হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে আবার ফিরে পেয়ে মনে হয়েছে তিনি যেনো আকাশের চাঁদই পেয়েছেন। সবাই দেখেছে এক ভালবাসায় সিক্ত মা’কে।
সাংবাদিকদের ওই মা রুনা বেগমের অনুভূমির প্রকাশ ছিল ঠিক এরকম- ‘৭ দিন আমি মৃত মানুষের মতো ছিলাম, মনে হয়েছিল এ পৃথিবীতে আমার কিছুই নাই। যখন আমার হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে আবার ফিরে পেলাম- তখন মনে হলো আমি সবকিছু ফিরে পেয়েছি।’ চুরি যাওয়া সেই শিশুকে ফিরে পেয়ে এভাবেই আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করলেন তিনি। দুই ছেলেকে একসঙ্গে কোলে নিয়ে বারংবার কপালে চুমু খাচ্ছেন রুনা বেগম। চোখ দিয়ে তখনও গড়িয়ে পড়েছে আনন্দাশ্রু।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে চুরি হয়ে হওয়া শিশুকে উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার দুপুরের পর মোহাম্মদপুরের জহুরি মহল্লার নিজ বাসায় নিয়ে যান সন্তানদের। বাসায় যাওয়ার পরই এলাকার লোকজন ভিড় জমাতে থাকে। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য মানুষের ভিড় জমে।
ঠিক একই দৃশ্য ছিল গতকালও রুনা বেগমের বাসায়। ছোট্ট ঘরে তিল ধারনের ঠাই নেই। প্রতিবেশীরা একের পর এক বাসায় আসছেন। রুনা বেগম ২ শিশু সন্তান ইয়াছিন হোসেন হৃদয় এবং এখলাছ হোসেন অপুকে নিয়ে বিছানাতেই বসে আছেন। সবার মুখেই তখন বিজয়ের হাসি।
রুনা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম এই সাতদিন। আজ আবার ঘর ভরে উঠেছে। আমার ২ সন্তানকে আমি একসঙ্গে আদর করতে পারছি।’ রুনা বেগমের স্বামী কাওসার হোসেন বাবুও উৎফুল্ল। দু’জনই সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা।
রুনা বেগম এ সময় বলেন, ‘আমি চাই, আমার মতো আর কোন মা যেন এমন কষ্ট না পায়। সন্তান হারানোর কষ্ট শুধু একজন মা-ই বুঝতে পারে। আর কেও এ কষ্ট বুঝবে না।’
রুনাকে দেখে বোঝা গেলো বাস্তবে এই দুনিয়াতে মায়ের গুরুত্ব কি। একজন মা তার সন্তানকে কতখানি ভালবাসেন তা রুনাকে দেখে অনুধাবন করা যায়। মা তো মা’য়ই। মায়ের চেয়ে বড় তাই এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই।
উল্লেখ্য, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ আগস্ট ভোরে রুনা বেগম যমজ এই শিশু পুত্রের জন্ম দেন। পরদিন কান্নাকাটি থামানো ও পরে চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে পারভীন নামে জনৈক মহিলা শিশু অপুকে চুরি করে নিয়ে যায়। অবশেষে র্যাবের একটি বিশেষ দল বুধবার রাত আড়াইটায় টঙ্গীর বোর্ডবাজার এলাকার সোনা মিয়ার বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়। এ সময় পারভীন ও রহিমাকে গ্রেফতার করে। এই সংঘবদ্ধ দলকে ধরার জন্য তাদের ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।