দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা অনেকেই অজ্ঞ। কিভাবে চললে শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখা অতি জরুরি। আর তাই মানব স্বাস্থ্যের নানা শর্ট নিউজ নিয়ে আমাদের আয়োজন সংক্ষিপ্ত স্বাস্থ্যকথা। আশা করি ছোট ছোট এসব স্বাস্থ্য ট্রিপস্ পড়ে সকলেই উপকৃত হবেন।
নাশপাতির নানাগুণ
নাশপতিতে রয়েছে পানিতে দ্রবনীয় ফাইবারগুলোর একটি অন্যতম উৎস। এতে বিদ্যমান আছে ভিটামিন-এ, বি-১, বি-২, ই, ফলিক এসিড এবং নিয়াসিন নামক পুষ্টিকর উপাদান। এ ছাড়া ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, আয়রনসহ অন্যান্য মিনারেলের উৎকৃষ্ট উৎস। গ্লুটাথিয়ন নামক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিক্যান্সার উপাদান বিদ্যমান থাকায় নাশপতি ফ্রি-রেডিক্যালের আক্রমণ থেকে দেহের কোষগুলোকে রক্ষা করে।
# হূদরোগে : করোনারি থ্রম্বোসিস, হার্ট ব্লক, মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্যাকশন ইত্যাদি রোগে প্রতিদিন ২-৩ টুকরো নাশপতি খেলে খুবই উপকার হয়।
# মুর্চ্ছা রোগে : প্রতিদিন সকালে ও বিকালে দুই-চার টুকরো নাশপতি খেলে মুর্চ্ছা রোগ সেরে যায়।
# অপুষ্টিতে : যেসব বাচ্চা অপুষ্টিতে ভুগে তাদের প্রতিদিন একটি করে নাশপতি (১ মাস) খাওয়ালে দুর্বলতা কাটবে ও স্বাস্থ্য উন্নত হবে।
# কোষ্ঠকাঠিন্য : কোষ্ঠকাঠিন্য তাড়াতে নাশপতির জুরি নেই। বিকালে বা রাত্রে খাওয়ার পর নাশপতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর হয়।
# মেয়েলি রোগে : মহিলাদের বিভিন্ন মেয়েলি রোগে (স্বেত প্রদর, অল্পস্লাব, অধিক স্লাব, বাধক বেদনা) সহ মনোপোজ পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা কাটাতে নাশপতির জুরি নেই।
# মাড়ি ক্ষয়রোধ : দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগস্ত হলে নাশপতির রস ও অল্প ফিটকারি মিশিয়ে রেখে সকালে খেলে মড়ির ক্ষয় পূরণ হয়।
# খুশকি ও চুল পড়া : খুশকি ও পেটের পীড়ার কারণে মাথার চুল পড়ে গেলে সিকি কাপ নাশপতির রস ১০-১৫ দিন খেলে চুল পড়া ও খুশকি দূর হয়।
রোগ প্রতিষেধক তুলসী চা
তুলসী গাছের গুণ নিয়ে যুগ যুগ ধরে গবেষণা হয়ে আসছে। তুলসী গাছকে ‘ভেষজ গাছের রাণী’ বলে। ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তুলসীর গুরুত্ব অপরিসীম। এ ছাড়া এর পাতার রস টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
তুলসীর ঔষধি গুণঃ
# অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিক্যান্সার।
# সর্দি, কাশি নিয়ন্ত্রণ করে।
# প্রস াবজনিত সমস্যা দূর করে।
# তুলসী চা হূদরোগের ঝুঁকি কমায়।
# শ্লেষ্মা ও নাক বন্ধের জন্য বিশেষ উপকারী।
# অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্ট থেকে রক্ষা করে।
# ডায়াবেটিস ও রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে।
# গ্যাস্ট্রিক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
# ধূমপায়ীদের জন্য তুলসী চা বিশেষ উপকারী।
# তুলসী চা পানে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
* ডা. আলমগীর মতি
হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক
শীত শেষ, ব্যথা শুরু
শীতে বাত-ব্যথা বেড়ে যায়। ধারণাটা ভুল। শীতের শুরু কিংবা শীতের শেষে গরমের শুরুতে অন্যান্য রোগের মতো শারীরিক ব্যথার রোগীর সংখ্যাও বেড়ে যায়। এর যুক্তিসঙ্গত কারণও আছে। ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের শরীরকে গরম কিংবা ঠাণ্ডার সঙ্গে মানিয়ে নিতে বেগ পেতে হয়। খেয়াল করে দেখবেন, যারা সাধারণত সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হন না তারাও গরম বা শীতের শুরুতে সিজনাল সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হন। এমনিভাবে যারা আগে থেকেই ঘাড়-কোমর হাঁটু, কাঁধসহ শারীরিক ব্যথায় ভোগেন তারা তো বটেই অনেক নতুন রোগীও এ সময়ে হঠাৎ তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত হন। অনেক রোগী অভিযোগ করেন সামনে ঝুঁকে মুখ ধুতে গিয়ে তার কোমরে এমন তীব্র টান ধরেছে, তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেন না, কিংবা সকালে গোসল করতে গিয়ে এমনভাবে ঘাড় খিচে ধরেছে, আর ঘাড় নাড়াতে পারছেন না। রোগীর বর্ণনা অযৌক্তিক নয়। ঋতু পরিবর্তনের সময় আমাদের শরীরের মাংসপেশিগুলো নতুন আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে গিয়ে স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা হারিয়ে ফেলে। ফলে এ সময় ঘাড়, কোমর হাঁটু বা কাঁধের মাংসপেশিতে আচমকা টান লাগে। তাই এ সময়ে পুরনো ব্যথার রোগীদের যেমন ব্যথা বৃদ্ধি পায়, তেমনি নতুন করে অনেকে ব্যথায় আক্রান্ত হন। এ সময়ে কিছুটা সতর্কতা জরুরি। যারা পুরনো ব্যথার রোগী তারা বিশেষজ্ঞ নির্দেশিত ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করুন। হঠাৎ তীব্র ব্যথায় আক্রান্ত হলে ১-২ দিন পূর্ণ বিশ্রাম নিন, ব্যথা না কমলে দ্রুত ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, সঠিক চিকিৎসার অভাবে যে কোন ব্যথাই দীর্ঘমেয়াদি আপনাকে ভোগাতে পারে। তাই বাত ব্যথায় চিকিৎসার বিকল্প নেই।
ডা. মোহাম্মদ আলী
পরিচালক ও চিফ কনসালট্যান্ট
এইচপিআরসি