দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানবতাবরোধী অপরাধে সাবেক কৃকায়সারের ফাঁসি দিয়েছে আদালত। জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ও সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ নামে পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগী বাহিনী গঠন করে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনকারী হবিগঞ্জ মহকুমার এই রাজাকার কমান্ডারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, আটক, মুক্তিপণ আদায়, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ষড়যন্ত্রের ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সর্বোচ্চ এই দণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার ২৩ ডিসেম্বর সকালে এই রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম এবং বিচারপতি মো: মুজিবুর রহমান মিয়ার সমন্বয়ে গঠিত ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। আজ মঙ্গলবার বেলা এগারোটা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে ১২টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কায়সারের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ১৬৬১ প্যারার ৪৮৪ পৃষ্ঠার রায়ের সারাংশ পাঠ করেন ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
অভিযুক্ত কায়সারের বিরুদ্ধে ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন’১৯৭৩ এর ৩(২)(এ), ৩(২)(সি), ৩(২)(জি), ৩(২)(আই), ২০ (২) ও ৪(১) ধারা অনুসারে আনা এসব অভিযোগের মধ্যে ছিল ১৫২ জনকে হত্যা-গণহত্যা, ২ নারীকে ধর্ষণ, ৫ জনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, মুক্তিপণ আদায় ও দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুণ্ঠনের অভিযোগ।
এসব অভিযোগের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে ৪ এবং ১৫ নম্বর বাদে সবগুলো অভিযোগ। প্রমাণিত ১৪ অভিযোগের মধ্যে ৭টিতে অর্থাৎ ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। ৪টি অর্থাৎ ১, ৯, ১৩ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে তাকে দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ। এছাড়া ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর, ৭ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর ও ১১ নম্বর অভিযোগে ৫ বছর মিলিয়ে আরও ২২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে তাকে। প্রমাণিত না হওয়া ৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ হতে খালাস পেয়েছেন কায়সার।
উল্লেখ্য, একাত্তরে সৈয়দ কায়সার প্রথমে হবিগঞ্জ মহকুমা শান্তি কমিটির সদস্য এবং রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ৫০০/৭০০ স্বাধীনতাবিরোধী লোক নিয়ে নিজের নামে ‘কায়সার বাহিনী’ নামে পাকিস্তানী সেনাদের সহযোগিতা করার জন্য একটি সহযোগী বাহিনী গঠন করেন। তিনি নিজে ওই বাহিনীর প্রধান ছিলেন। ‘কায়সার বাহিনী’ নামাঙ্কিত এ বাহিনীর নিজস্ব ইউনিফরমও ছিল।