দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিন্দু ধর্মে দেবতাদের পূজা করার রীতি রয়েছে। এবার দেবতা ভেবে এক মুসলিম কিশোরকে পুজা করছে হিন্দুরা! ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরের নাম মোহাম্মদ রায়হান।
এই ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার উত্তর কালিমান্টানের একটি গ্রামে ঘটেছে। ১৩ বছর বয়সী এই কিশোরকে রীতিমতো পুজা করা শুরু করেছে সেখানকার স্থানীয় হিন্দুরা। অথচ ক’দিন আগেও স্কুলে গেলে বন্ধুবান্ধবরা এই কিশোরকে ভীষণ উত্যক্ত করতো, এমনকি মারধরও করতো।
কেনো এই কিশোরকে পূজা? আসলে ওই কিশোরের শরীরে রয়েছে প্রচুর লোম। এমনকী মুখেও প্রচুর লোম। ওই কিশোরের দুই ঠোঁট যথেষ্ট পুরু, তার দুই ভ্রু ক্রমশ মিলিয়ে গিয়েছে মাথার চুলের সঙ্গে। নাকটিও অসম্ভব রকমের চওড়া ও থ্যাবড়া। এজন্যই সহপাঠীদের অনেকেই তাকে নেকড়ে বাঘ বলে ডাকতো। বয়সে ছোট হলেও বেশ সহনশীলতা রয়েছে এই কিশোরের। এসব ঘটনায় কিছুই মনে করে না সে। এটিকে তার নিয়তি বলেই মেনে নিয়েছে ওই কিশোর।
এর ঠিক উল্টো দিকও রয়েছে তার জীবনে। যে কারণে তার সহপাঠীদের যেমন নেকড়ে বাঘ বলে মনে হয়, ঠিক একই কারণে রায়হানের গ্রামের লোকদের কাছে তাকে হনুমান বলে মনে হয়। শুধু তার নিজ গ্রাম নয়, আশপাশের বহু গ্রামের মানুষের কাছেই এই কিশোর হিন্দুদের ভগবান ‘হনুমানজি’। ওইসব ‘ভক্ত’দের মতে, সে আসলে হনুমানজির এই যুগের অবতার। সেই ভাবনা হতেই শুরু হয় মুসলিম ওই কিশোরের পূজাপাঠ।
তবে রায়হান এটাতেও কিছু মনে করে না। তার বক্তব্য হলো, ‘কিছু মানুষ আমাকে দেখে হাসে। অন্যরা আমার কাছে আশীর্বাদ চাইতেও আসে। আমি কোনো কিছুতে মোটেও গুরুত্ব দিই না। আসলে আমার খুব হাসি পায়, যখন দেখি আমাকে একবার শুধু দেখবেন বলে অনেক সময় বহু দূর-দূরান্ত হতে মানুষজন আসেন।’
রায়হান নিজেকে দেবতা ভাবে কি না এমন এক প্রশ্নে রায়হানের জবাব হলো, ‘বহু মানুষ ভাবেন আমি ভগবান এবং আমার বিশেষ ক্ষমতাও রয়েছে। আসলে আমিতো অন্যদের হতে দেখতে একেবারেই আলাদা। আর সে কারণে কেও যদি এসব ভাবে, আমি তো সেই ভাবনা আটকাতে পারবো না।’
রায়হান জানে, চিকিৎসকরা তাকে নিয়ে কী বলেছেন। তারা বলেছেন যে, হরমন সমস্যার কারণেই তার শরীরে এতো লোম। সেজন্য লেজার চিকিৎসার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা। রায়হানের স্বামীহারা মায়ের পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই রায়হানকে পূজা করতে সম্মতি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই তাদের! সংবাদ মাধ্যমকে এমনটিই জানিয়েছেন রায়হানের মা।