দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সত্যিই এমন কথা শুনে হয়তো আপনি বিস্মিত হবেন কারণ হলো মিশরের আসোয়ান জনপদের মানুষ নাকি জানেই না বৃষ্টি কাকে বলে! কিন্তু কেনো?
বর্ষাকাল বলে যে একটি ঋতু রয়েছে, তা ওরা কেবলমাত্র বইয়ে পড়েছে। কখনও চোখে দেখেনি সেই বর্ষাকাল! ইজিপ্টোলজিস্ট মীনা (৩৫) বা মিশর পর্যটন দফতরের কর্মী আবদুল্লা (৪০) জীবনেও কোনোদিন বৃষ্টি দেখেননি। পঞ্চাশ বছর বয়সী আরাফত ছোটবেলায় একবার বৃষ্টি হচ্ছে বলে শুনেছিলেন! তবে দরজা খুলে বারান্দায় এসে দেখতে গিয়ে দেখেন কোথায় কী! বালিই সব শুষে নিয়েছে। রাস্তাঘাট সেই আগের মতোই খটখটে। অবস্থাটা এমন যে, তাতানো (গরম) তাওয়ার ওপর কয়েক ফোটা পানি ফেললে যেমন সঙ্গে সঙ্গে ছেনাত করে শুষে নেই, সে পানির কিছুই আর দেখা যায় না, ঠিক এটিও তেমনই ঘটনা ছিলো।
মিশরের দক্ষিণ প্রান্তীয় শহর আসোয়ান এমনই এক জনপদের নাম। যেখানে বৃষ্টি অতি দুর্লভ একটি বস্তু। শহর ঢুঁড়ে এমন এক জনকেও মিলবে না যিনি কোনোদিন বৃষ্টি দেখেছেন। মীনার কথায়, ‘আমাদের এখানে মাত্র ৪টি ঋতু। গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত।’
এপ্রিল হতে সেপ্টেম্বর- এই ৬ মাস পৃথিবীর ও-তল্লাটে গ্রীষ্ম। তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। আমাদের দেশে যখন প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় বন্যা হয়ে যায়, তখন পৃথিবীর ও প্রান্তে এক ফোঁটা পানি নষ্ট করাটা হয় বড় অপরাধ। মিশরের এই আসোয়ান শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে চলেছে নীল নদ। আর সেটিই সেখানকার পানির একমাত্র উৎস। আসোয়ানে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সরকারি নথি বলছে ০.১ মিলিমিটার।
কেনো এমন অনাবৃষ্টি সেখানে? আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা বলছেন, বৃষ্টির উৎস হলো মেঘ। আকাশে যদি মেঘই না জমে তাহলে বৃষ্টি হয় না। মেঘ তৈরির একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকে। তাপমাত্রা যতো বাড়ে, ততোই বাতাস গরম হতে থাকে। তখন হাল্কা গরম বাতাস উপরের দিকে উঠে যায়। উপরে উঠতে উঠতে সেই বাতাসের স্তর ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে এসে ঘনো হতে শুরু করে। তখন তৈরি হয় মেঘ। সেই মেঘ ভেঙেই বৃষ্টি শুরু হয়। তবে মরুভূমি এলাকায় গরম বাতাস উপরে ওঠার আগেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। যে কারণে তারা কখনওই বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরে ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আসতে পারে না। যে কারণে মেঘও তৈরি হয় না। আর তাই বৃষ্টি হয় না।