দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স কমানোর জন্য আমরা কতো কিই না করি। তবে এবার বয়স কমানোর এক পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, বয়স কমে যাবে মহাকাশে গেলেই!
এমন একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। তাহলো মহাকাশে গেলে নাকি বয়স থমকে যাবে। চুলে পাক ধরবে না কিংবা টাক পড়বে না। চামড়ায় ভাঁজও আসবে না শরীরে!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, এক বছরের বেশি সময় মহাকাশে ছিলেন নভশ্চর স্কট কেলি নামে এক ব্যক্তি। ৩৮২ দিন মহাকাশে কাটিয়ে পৃথিবীতে যখন তিনি ফেরেন তখন স্কটকে অভ্যর্থনা জানাতে বাকিদের মধ্যে হাজির ছিলেন তারই ভাই মার্ক কেলি। দুই ভাইকে পাশাপাশি দেখে টনক নড়ে যায় নাসার বিজ্ঞানীদের। স্কট-মার্ক দুজন যমজ ভাই। কিন্তু মহাকাশে কাটিয়ে আসা স্কটকে মার্কের চেয়ে বয়সে বেশ খানিকটা কম লাগছিলো। এমন কিছু তো হওয়ার কথা নয়। এক বছর আপূর্বেও দুই যমজ ভাইয়ের মধ্যে কোনো ফারাক দেখা যেতো না।
বিষয়টি নিয়ে খটকা লাগায় বিজ্ঞানীরা হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি। দু’জনের জিন নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায় বিজ্ঞানীদের মধ্যে। মানব শরীরে ক্রোমজোমের শেষ প্রান্তে একটি ছোট্ট প্যাকেটের মতো বস্তু রয়েছে। যারমধ্যে থাকে কোষের ডিএনএ। ওই প্যাকেটের মতো বস্তুটির আয়তন দেখেই বয়সের ছাপ পড়ার বিষয়টি ধরা যায়। যতো সময় পার হয় ততোই ওই প্যাকেট কুঁচকে ছোট হয়ে যায়। স্কটের ক্ষেত্রে দেখা যায় এটির ঠিক উল্টো। অর্থাৎ মহাকাশ হতে ফেরার পর স্কটের শরীরে ওই ডিএনএ বহনকারী প্যাকেটগুলির আয়তন ছোট তো হয়নি বরং তা বেড়ে গেছে!
গবেষকরা বলেছেন, যদিও এই প্যাকেটের বাড়া-কমা অনেকটাই নির্ভর করে একজনের খাদ্যাভাস এবং জীবনযাত্রার ওপর। যে যতো পরিমিত ক্যালরির খাবার খায় এবং ব্যায়াম করে তার শরীরে বার্ধক্য ততো দেরিতে আসে। এই তথ্য মাথায় রেখেই বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ মহাকাশে গিয়ে বয়স কমার তত্তটি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের যুক্তি হলো স্কট গত এক বছরে মহাকাশে ক্যালরি মেপে খাবার খেয়েছেন।
তাছাড়া মহাকাশে শারীরিক কসরতের প্রয়োজন হয় অনেক বেশি। এই দুয়ের মেলবন্ধনেই মূলত যমজ ভাইয়ের চেয়ে বয়সে কম দেখাচ্ছে স্কটকে।
তবে বয়স কমার গল্প মানতে রাজি নন ভারতের একমাত্র নভশ্চর রাকেশ শর্মাও। তিনি ১৯৮৪ -তে ৮ দিনের জন্য মহাকাশে কাটিয়েছিলেন।
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো পৃথিবীতে ফেরার কয়েক দিনের মধ্যেই দেখা যায় যে আবার ভাইয়ের মতোই ‘বয়স্ক’ হয়ে যাচ্ছেন স্কট।