দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকেই থাকেন ভ্রমণ পিপাসু। ভ্রমণের জন্য নিজের সংসার ধর্ম ত্যাগ করতেও যেনো প্রস্তুত। এবার এমনই এক দম্পতির সন্ধান পাওয়া গেছে যারা বাড়ি-গাড়ি সব বিক্রি করে বেরিয়েছেন বিশ্বভ্রমণে!
আমরা অনেকেই দৈনন্দিন কাজ করে হাঁপিয়ে ওঠি। বছরে একবার ভ্রমণে বের হলে অন্তত মনের সেই ক্লান্তি কাটে, নতুন নতুন জায়গা দেখা হয়। তাই ভ্রমণ পিপাসুরা প্রায় সময় কোথাও না কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকেন। যে কোনো সাপ্তাহিক বা বাৎসরিক ছুটির মানেই হলো কিছুটা সময় ‘নিজের করে’ রাখা। তবে জায়গা-জমি বিক্রি করে বিশ্ব ঘুরে বেড়ান, এমন দম্পত্তির সংখ্যা পৃথিবীতে খুব একটা নেই বললেই চলে! এবার আমরা আপনাকে খোঁজ দিতে পারবো এমনই একজন দম্পত্তির যিনি বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলের মাইকেল-ডেবি দম্পতি হলেন এমন এক দম্পতি। মাইকেল ক্যাম্পবেলের বয়স বর্তমানে ৭২, আর ডেবির বয়স ৬২ বছর। ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছেটা তাদের আরও আগে হলেও তাদের যাত্রা শুরু ২০১৪ সালে। দাম্পত্য জীবনের যখন ৩৬ বছর হয়েছিলো, তখন প্রথমে দুজনই চাকরি ছাড়লেন। এরপর বেচলেন বাড়ি-গাড়ি সব কিছু! সেই টাকায় গত ৫ বছরে বিশ্বের ৮১টি দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন এই দম্পতি। সেই টাকায় এ পর্যন্ত দেশের ২৬০টিরও বেশি শহর ঘুরেছেন।
তবে বললেন বা সিদ্ধান্ত নিলেই হয়না, নিজের শেষ সম্বলটুকু বিক্রে করে ঘুরতে বেরোনো যায় না। মাইকেল-ডেবি দম্পতির ভাষায়, সব বিক্রি করে দিলাম। আর কিছু জিনিস গুদামে রেখে দিলাম। দুজনে মিলে ভ্রমণে বেরিয়ে পড়লাম। তবে আমাদের শুরুটা মোটেও খুব সহজ ছিলো না। জীবনের মূল সম্বলটুকু বিক্রি করার সিদ্ধান্ত। প্রথমে ভাবি কোথায় কোথায় যাবো। সে–সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্যও সংগ্রহ করি। যাত্রাপথটা আমরা ঠিক করি। প্রয়োজনীয় অন্য জিনিসগুলোও চূড়ান্ত করে নিই আমরা।
যেহেতু সব বিক্রি করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাই খরচের ব্যাপারে বেশ সচেতন এই দম্পত্তি। তারা জানিয়েছেন, থাকার জন্য এক রাতে ৯০ ডলারের বেশি খরচ করেন না তারা কখনও। অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা, সেখানেই কেনাকাটা করে রান্নাবান্না করেন তারা। বাকি সময় ঘুরে বেড়ান দুজনে মিলে। সময় হলেই বসে পড়েন ব্লগ লিখতে! তারা ‘সিনিয়র নোম্যাড’ বা ‘প্রবীণ যাযাবর’ নামে একটি ব্লগ লেখেন। তারা ছবি ও গল্পে তুলে ধরেন নতুন নতুন জায়গার কথা।
বাড়ি বাড়িতে থেকে ভ্রমণ করাটা কতোটা চ্যালেঞ্জের? এই প্রশ্নের জবাবে মাইকেল বলেন, বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত খুব সহজ ছিলো না। এই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমরা মনে করি, যেখানে আমরা রয়েছি, সেটিই আমাদের বাড়ি। ৪০ বছরের দাম্পত্য জীবন আমাদের। আমরা দুজনে একই পথের যাত্রী। দুজনের চিন্তা-ধারাও একই রকম। সে জন্যই হয়তো আমাদের এমন পথ বেছে নিতে কোনো সমস্যা হয়নি। বিষয়টি একটি দলগত খেলার মতোই!
ইচ্ছে থাকলে সবই করা সম্ভব। ইচ্ছের পাশাপাশি ভালো পরিকল্পনাও লাগবে সেজন্র। সেইসঙ্গে চলার মতো টাকা-পয়সাও দরকার। তবেই নিশ্চিতে মনের সুখে ঘুরে বেড়ানো যাবে যেখানে খুশি। বিষয়টি ঠিক এভাবেই বলেছেন এই দম্পত্তি।